বাড়ল সুদ কমার সম্ভাবনা। মূল্যবৃদ্ধি তলানিতে ঠেকা ও কল-কারখানার উৎপাদন বাড়ার গতি কমে আসায় সুদ কমানোর পক্ষে জোরালো সওয়াল করছে শিল্প মহল।
মে মাসে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ছুঁয়েছে ২.১%। পাঁচ মাসে সর্বনিম্ন। শিল্প বৃদ্ধিও এপ্রিলে নেমেছে ৩.১ শতাংশে।
শিল্প চাঙ্গা করতে সুদ কমানো প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, অগস্টে না-হলে অক্টোবরে ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই আশায় চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে বন্ড বাজারে। জুলাইয়ে জিএসটি চালু হলে দামের উপর তার কী প্রভাব পড়ে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অবশ্য তা দেখে নিতে চাইবে। তবে ঋণে সুদ কমলে তার জের পড়বে ব্যাঙ্ক জমার সুদেও। অন্য দিকে সুদ কমলে তা শক্তি জোগাবে শেয়ার ও বন্ড বাজারকে।
গত সপ্তাহের মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ সুদ ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। এই খবর ভারতীয় বাজারের পক্ষে প্রতিকূল হলেও, তা আতঙ্ক ছড়াতে পারেনি। ঘোষণার পরে দু’দিনে সেনসেক্স নেমেছে মাত্র ১০০ পয়েন্ট। দেশের ভিতর থেকে লগ্নি এখন এতটাই জোরালো যে, বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে অনেকটা উপেক্ষা করতে পারে বাজার। এ ছাড়া ভারতের অর্থনীতি এখন শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে থাকায় বিদেশি লগ্নি খুব একটা পিছু হটবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে না।
ব্যাঙ্ক জমায় যখন সুদ আরও কমার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে, তখন দু’মাসে ১.৫ থেকে ২% বেশি সুদে বাজারে আসতে চলেছে আনুমানিক ৫,০০০ কোটি টাকার কর্পোরেট বন্ড। যে সব সংস্থা বন্ড ছাড়তে পারে, সেগুলি হল: টাটা হাউসিং ফিনান্স, মহীন্দ্রা ফিনান্স, শ্রেয়ী ইক্যুইপমেন্ট ফিনান্স ইত্যাদি। এই সব ইস্যুতে সুদ হতে পারে (রেটিং অনুযায়ী) ৭.৫% -৯% পর্যন্ত। এখন ব্যাঙ্ক জমায় সুদ কম-বেশি ৭%, যা আরও কমার আশঙ্কা। এপ্রিলে মুথুট ফিনান্স বাজারে হাজির হয় ৩৮ মাস মেয়াদি বন্ড নিয়ে, যার সুদ ছিল ৮.৭৫%। বন্ডে লগ্নি করতে হবে সুদের হার, ক্রেডিট রেটিং এবং ঝুঁকি নেওয়ার সামর্থ্য অনুযায়ী।
লগ্নির দিশা
• শক্তি বাড়বে বন্ড, শেয়ার দু’টি বাজারেরই
• বন্ড কিনতে হবে সুদ, রেটিং এবং নিজের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা দেখে
• শেয়ার বাজারে হাতেখড়ির সুযোগ দিতে পারে নতুন ইস্যু
১৯ জুন নতুন ইস্যু নিয়ে বাজারে হাজির হচ্ছে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি সার্ভিসেস লিমিটেড (সিডিএসএল)। কোনও ডিপোজিটরি সংস্থার এটিই প্রথম পাবলিক ইস্যু। মূল্যবন্ধনী স্থির হয়েছে ১৪৫-১৪৯ টাকা। এর মাধ্যমে বাজার থেকে ৫২৪ কোটি টাকা তুলতে চায় সংস্থা। আবেদন করতে হবে কমপক্ষে ১০০টি শেয়ারের জন্য। এই ইস্যু লগ্নিকারীদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পাবে বলে আশা।
গত বছর এক্সচেঞ্জ হিসেবে প্রথম ইস্যু আনে বিএসই। প্রথম বিমা সংস্থা হিসেবে বাজারে আসে আই সি আই সি আই প্রুডেন্সিয়াল। ভাল লাভের সন্ধান দিয়েছে এই দুই শেয়ারই। গত এক বছরে যত সংস্থা প্রথম শেয়ার এনেছে, তাদের মধ্যে কয়েকটি বাদে বাকিরা সবাই কম-বেশি লাভের সন্ধান দিয়েছে। এক বছর বা তার কম সময়ে লগ্নি দ্বিগুণ হয়েছে আর বি এল ব্যাঙ্ক, পিএনবি হাউসিং, অ্যাভিনিউ সুপার মার্টস, অ্যাডভান্সড এনজাইম, কোয়েস কর্প, দিলীপ বিল্ডকন, মহানগর গ্যাসের মতো ইস্যুতে। সব মিলিয়ে সুদিন চলছে ইস্যুর বাজারে। এখানেই শেয়ার বাজারে হাতেখড়ি নিতে পারেন নতুন লগ্নিকারীরা।