দেশের অর্থনীতির ছবি ভবিষ্যতে আরও উজ্জ্বল হবে, তবে অনুৎপাদক সম্পদের ভারে জর্জরিত ব্যাঙ্কগুলির ঋণ দেওয়ার মতো তহবিলে টান পড়তে পারে।
বণিকসভা সিআইআই এবং ব্যাঙ্ক মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের (আইবিএ) সমীক্ষা এই ইঙ্গিতই দিয়েছে। চলতি ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের (এপ্রিল থেকে জুন) জন্য দেশের আর্থিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত সিআইআই-আইবিএ সূচকও দাঁড়িয়েছে ৫৬.৯। আগের ত্রৈমাসিক জানুয়ারি থেকে মার্চে তা ছিল ৪৮, যার অর্থ সমীক্ষায় সামিল বেশির ভাগ সংস্থাই মনে করছে, সার্বিক ভাবে অর্থনীতির হাল ফিরবে। উল্লেখ্য, ৩১টি প্রধান প্রধান ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাকে নিয়ে এপ্রিল থেকে জুনের জন্য এই সমীক্ষা করা হয়েছে।
সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে আশার আলো দেখিয়েছে এই সূচক।’’ এর পিছনে তিনি যে-সমস্ত কারণকে চিহ্নিত করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে:
• সাধারণ ভাবে চাহিদা খাতে খরচ বৃদ্ধি পাওয়া
• পরিকাঠামোয় সরকারি লগ্নি
• পণ্য-পরিষেবা কর চালু করার দিকে এগোনো
• আর্থিক সংস্কারের অন্যান্য পদক্ষেপ
• ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদে রাশ টানতে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া
তবে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থার একটি বড় অংশই মনে করছে তাদের তহবিল সংগ্রহের খরচ বাড়তে পারে। তার কারণ, ভবিষ্যতে টান পড়তে পারে দশ বছরের সরকারি ঋণপত্র বাবদ আয়ে। তা ছাড়া ঋণে সুদ গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকেই (জানুয়ারি থেকে মার্চ) কমিয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, যে-কারণে এপ্রিল থেকে জুনে আর তা কমাটা প্রত্যাশিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আইবিএ-র চেয়ারম্যান রাজীব ঋষি।
এর জেরে শিল্পে ঋণ কমতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সমীক্ষা। ইতিমধ্যেই বকেয়া ঋণের কারণে বেড়েছে ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা। তার পর তহবিল জোগাড় করায় অসুবিধা হলে শিল্প-ঋণে ঘাটতি তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে তারা। এপ্রিল-জুনের তহবিল সংগ্রহের খরচের সূচকে অবশ্য তার প্রভাব পড়েনি। এই ত্রৈমাসিকে তা ৪০.৩-তে নামবে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় যা ২৫.৭ বেসিস পয়েন্ট কম।