গাড়ি চলবে আরও বিশুদ্ধ মাপকাঠি মেনে উৎপাদিত তেলে। কিন্তু তার ইঞ্জিন থাকবে আগের মতোই। তা হলে কি দূষণ কমবে? এই প্রশ্ন জিইয়ে রেখেই রাজধানীর দূষণ কমাতে বুধবার নতুন ঘোষণা করল তেল মন্ত্রক।
তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান তেল সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, আগামী ১ এপ্রিল থেকেই দিল্লিতে ভারত স্টেজ-৬ (বিএস-৬) মানের জ্বালানি চালু হবে। রাজধানী সংলগ্ন অঞ্চলে ২০১৯-এর এপ্রিল থেকেই এই উন্নত তেল চালু করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতেও সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান।
এমনিতে দেশে বিএস-৬ পরিবেশ বিধি মেনে তৈরি গাড়ি ও তেল চালু হওয়ার কথা ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে। সে জন্য তেল সংস্থাগুলি যেমন শোধনাগারের যন্ত্রপাতি বদলাচ্ছে, তেমনই গাড়ি সংস্থাগুলিও নতুন ইঞ্জিন নিয়ে গবেষণা করছে। কিন্তু বায়ু দূষণের কারণে রাজধানীতে প্রস্তাবিত সময়সীমার দু’বছর আগেই বিএস-৬ জ্বালানি চালু করতে চান প্রধান।
তবে জ্বালানির মান উন্নত হলেও, এপ্রিল থেকে বিএস-৬ দূষণ বিধি মেনে তৈরি গাড়ি চালু হচ্ছে না। গাড়ি সংস্থাগুলি তার জন্য তৈরিও নয়। তারা ২০২০-র লক্ষ্য নিয়েই চলছে।
সে ক্ষেত্রে অনেকেরই প্রশ্ন, এপ্রিল থেকে দিল্লির বাইরে গেলে কী হবে? কারণ রাজধানীর বাইরে তো তখনও বিএস-৪ বিধি মেনে তৈরি তেলই বিক্রি হবে। অন্য জায়গা থেকে দিল্লিতে এলেও সমস্যা। সে ক্ষেত্রে বিএস-৪ অথবা বিএস-৩ মাপকাঠি মেনে তৈরি গাড়িতে কি নতুন মানের তেল ভরা যাবে?
গাড়ি শিল্পের অবশ্য দাবি, বিএস-৪ মাপকাঠির ইঞ্জিনে বিএস-৬ জ্বালানি ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু, গাড়ি বিএস-৬ বিধি মেনে তৈরি হলে, তাতে এখনকার জ্বালানি ভরা যাবে না।
এর সঙ্গেই অবশ্য আরও কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। যেমন, বিএস-৬ ইঞ্জিন ও জ্বালানি ব্যবহার হলে যে ধোঁয়া বার হয়, তাতে নাইট্রোজেন অক্সাইড ও ক্ষতিকর ধূলিকণা প্রায় ৮০% কমার কথা। কিন্তু ইঞ্জিন না-বদলে, শুধু তেল বদলালে কি দূষণ কমবে? মন্ত্রক তেমন দাবি করলেও, সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের বক্তব্য, সেই গবেষণা এখনও হয়নি। গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়ামের মতে, সরকার একই সঙ্গে বিএস-২ গাড়ি তুলে নিলে কিছুটা সুরাহা হতে পারে।
সব মিলিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে খুশি গাড়ি শিল্প। মহীন্দ্রার এমডি পবন গোয়েন্কা বলেন, ‘‘এই ঘোষণায় নিশ্চিত হওয়া গেল, ২০২০-র এপ্রিল থেকে বিএস-৬ গাড়ি নামতে শুরু করলে জ্বালানির অভাব হবে না।’’