ঝড় সামলানোর লোক কই, প্রশ্ন সরকারের অন্দরেই

দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন। অথচ হাওয়া সুবিধা নয় দেশের অর্থনীতির। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু সেই চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে তীক্ষ্ণ চিন্তার অর্থনীতিবিদের অভাবও। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

বিদায়: প্রথমে রাজন। তার পরে পানাগড়িয়া। এ বার সুব্রহ্মণ্যন।

দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন। অথচ হাওয়া সুবিধা নয় দেশের অর্থনীতির। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু সেই চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে তীক্ষ্ণ চিন্তার অর্থনীতিবিদের অভাবও।

Advertisement

মোদী জমানায় যাঁরা অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন, তাঁদের মধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন সেই অর্থে বিজেপির ‘কাছের লোক’ ছিলেন না। শীর্ষ ব্যাঙ্কে তিন বছর কাটানোর পরে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব নেওয়ার দৌড়ে সামিল হতে আর উৎসাহ দেখাননি তিনি। তার পরে ব্যক্তিগত কারণে নীতি আয়োগ ছাড়েন অরবিন্দ পানাগড়িয়া। এ বার একই পথে হাঁটতে চলেছেন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনও।

অনেকের মতে, বাজেপেয়ী হোক বা মোদী জমানা— বিজেপি কখনও মনমোহন সিংহ বা পি চিদম্বরমের মতো দুঁদে অর্থমন্ত্রী পায়নি। যাঁরা অর্থনীতির উপরে যাবতীয় ঝড়ঝাপ্টা সামাল দিতে পারেন। অনেক সময়ে নির্ভরযোগ্য আর্থিক বিশেষজ্ঞ খুঁজতেও বেগ পেতে হয়েছে।
সুব্রহ্মণ্যনের বিদায়ের পরে ভাঁড়ারে আরও টান পড়ল বলে তাঁদের মত। বিজেপির তরফে অবশ্য দাবি, এই সমস্যা তাদের কোনও দিনই নেই।

Advertisement

নীতি আয়োগের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এমন সময়ে সুব্রহ্মণ্যন বিদায় নিচ্ছেন, যেটা ভোটের আগের বছর। অথচ জনমোহিনী নীতির বদলে নতুন আর্থিক নীতি এখনই জরুরি। কারণ সংস্কার, বৃদ্ধির হারের গতি খুব খারাপ না হলেও, যথেষ্ট সংখ্যায় চাকরি হচ্ছে না। বিশেষ করে ভাল মাইনের চাকরির খুব অভাব।’’

অর্থ মন্ত্রকের এক সূত্রের যুক্তি, সুব্রহ্মণ্যন প্রথমেই বুঝেছিলেন যে, ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেট সংস্থার হিসেবের খাতার বেহাল দশাই নতুন লগ্নি না আসার কারণ। তার অভাব মেটাতে সরকারি লগ্নি বাড়ানোর দাওয়াই দেন তিনি। এত দিন সেই নীতিতেই কেন্দ্র চলেছে। সহজ ভাষায় সমস্যা ও তার সমাধান তুলে ধরতে পারতেন বলেই সুব্রহ্মণ্যনের তৈরি ‘আর্থিক সমীক্ষা’ এখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তক। চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘এই সুব্রহ্মণ্যনের সঙ্গেই নোট বাতিলের আগে আলোচনা করা হয়নি। রাজস্ব আয় একই রেখে জিএসটির হার কত হওয়া উচিত, তা নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছিলেন সুব্রহ্মণ্যন। সেই রিপোর্ট অভদ্রতা করে সরিয়ে ফেলা হয়।’’

কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজন নোটবন্দির বিরুদ্ধে ছিলেন। পানাগড়িয়া সরকারের সংস্কারের কাজে খুশি ছিলেন না। এঁদের বদলে কেন্দ্র এখন আর্থিক উপদেষ্টা ও বিশেষজ্ঞ পদে ‘অনুগত’দেরই খুঁজছে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে যোগ্য লোক মিলছে না বলেই ফেব্রুয়ারি থেকে মুখ্য পরিসংখ্যানবিদের পদ খালি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন