কৃষিতে বয়ান বদল কেন্দ্রের

নোটবন্দিতে চাষির ভাল! ডিগবাজি কৃষি মন্ত্রকের

মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রকেরই সচিব সঞ্জয় আগরওয়াল স্থায়ী কমিটির সামনে কার্যত জোড় হাতে ক্ষমা চেয়ে জানালেন, আসলে তাঁদের হিসেবে ভুল হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৩
Share:

এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল মোদী সরকারের কৃষি মন্ত্রক।

যেন সেই সুকুমার রায়ের হযবরল। ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল!

Advertisement

নোট বাতিল নিয়ে ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল মোদী সরকারের কৃষি মন্ত্রক।

এক সপ্তাহ আগে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে কৃষি মন্ত্রক জানিয়েছিল, নোটবন্দির ধাক্কায় ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন দেশের চাষিরা। নগদের অভাবে তাঁরা সার, বীজ কিনতে পারেননি। আর পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের মুখে কৃষি মন্ত্রকের ওই ‘স্বীকারোক্তি’ রাহুল গাঁধীর কংগ্রেসের প্রচারের বড় হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা বীরাপ্পা মইলি একে আখ্যা দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীর নোট নাকচের কুপ্রভাবের ‘প্রথম সরকারি স্বীকারোক্তি’ হিসেবে।

Advertisement

মঙ্গলবার সেই কৃষি মন্ত্রকেরই সচিব সঞ্জয় আগরওয়াল স্থায়ী কমিটির সামনে কার্যত জোড় হাতে ক্ষমা চেয়ে জানালেন, আসলে তাঁদের হিসেবে ভুল হয়েছিল। নতুন রিপোর্টে দাবি, নোট বাতিলের ফলে সার-বীজের বিক্রি নাকি আসলে কমেনি। উল্টে বেড়েছে! বেড়েছিল রবি ফসলের আওতায় চাষের জমিও।

ছিল রুমাল...

আগের রিপোর্ট
এমন একটা সময়ে নোট বাতিলের ঘোষণা হয়েছিল, যখন চাষিরা হয় খরিফ ফসল বিক্রি করছেন, নয়তো রবি ফসলের বীজ বুনছেন। নোটবন্দির জেরে বাজারে নগদের অভাব দেখা দিয়েছিল। ফলে বীজ-সার কেনা এবং ফসলের বিক্রি— দু’য়েই ধাক্কা লাগে।
২০/১১ /১৮

নতুন রিপোর্ট
নোট নাকচের ঘোষণার আগেই রবি ফসলের চাষের জমি তৈরি ছিল। কেনা হয়ে গিয়েছিল সার, বীজ। একমাত্র গম ছাড়া তৈলবীজ ও ডালের বীজ কেনা শেষ হয়ে গিয়েছিল। এমনকি গমের ক্ষেত্রেও বীজ কেনায় কোনও সমস্যা হয়নি। কারণ, সরকার বাতিল নোটে বীজ কেনার অনুমতি দিয়েছিল। বরং ওই মরসুমে গমের বীজ আগের মরসুমের তুলনায় বেশি বিক্রি হয়েছিল। সমস্যা হয়নি খরিফ ফসল বিক্রিতে।
২৭/১১ /১৮

সরকারি সূত্রের খবর, ওই ‘স্বীকারোক্তি’র পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তোপের মুখে পড়েন কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ। তিনিই জানান, রিপোর্টে ভুল রয়েছে। মন্ত্রকের এক অফিসারকে শাস্তির মুখেও পড়তে হয়। এর পরেই কৃষি সচিব কমিটিকে জানান, বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য এক জায়গায় করতে গিয়ে ভুল হয়েছিল। তাই বিভ্রান্তি।

সূত্রের বক্তব্য, কৃষি মন্ত্রকের আগের ও আজকের রিপোর্টের তত্ত্ব ও তথ্য, দু’য়েতেই বিস্তর ফারাক। আগের রিপোর্টে কৃষি মন্ত্রক বলেছিল, এমন সময়ে নোট বাতিলের ঘোষণা হয়, যখন চাষিরা হয় খরিফ ফসল বিক্রি করছেন, নইলে রবি ফসলের বীজ বুনছেন। নোট নাকচে নগদের অভাব হয়। ফলে ফসলের বিক্রি ও বীজ-সার কেনায় ধাক্কা লাগে। কিন্তু নতুন রিপোর্টে তাদের দাবি ঠিক উল্টো। তা হল, নোট বাতিলে আখেরে চাষিদের লাভই হয়েছে! কৃষি ক্ষেত্রের অনেকটা সংগঠিত ক্ষেত্রের আওতায় এসেছে। খরিফ ফসল বিক্রিতে সমস্যা হয়নি। রবি ফসলের জমি, উৎপাদন বেড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন