অতিকায়: এয়ারবাসের এ-৩৮০ বিমান। ফাইল চিত্র
যাত্রীদের নয়নের মণি। কিন্তু বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলির চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসারদের (সিএফও) কাছে মূর্তিমান মাথাব্যথা। বিশ্বের সেই সবচেয়ে বড় বিমান এ-৩৮০ তৈরি বন্ধ করতে চলেছে ইউরোপীয় সংস্থা এয়ারবাস। যার এক একটির দাম ৩ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। শুধু ইকনমি শ্রেণির আসন থাকলে, একসঙ্গে ৮৫০ জন যাত্রীকে নিয়ে ওড়ার ক্ষমতা রয়েছে যে বিমানের।
বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের তুলুস থেকে এয়ারবাস জানিয়েছে, যাত্রীদের পছন্দের তালিকায় একেবারে উপরের দিকে থাকা সত্ত্বেও এ-৩৮০ তৈরি বন্ধ করে দিতে হবে তাদের। কারণ, যথেষ্ট সংখ্যায় বরাতের অভাব। সংস্থা জানিয়েছে, এ বছর ৮টি, পরের বছর ৭টি এবং ২০২১ সালে ২টি বিমান বানিয়ে ইতি টানা
হবে উৎপাদনে। সেই বিমান, যাকে আধুনিক সময়ে ইউরোপের অন্যতম তাক লাগানো কারিগরি হিসেবে দাবি করেছিল এয়ারবাস। আমেরিকার বোয়িং যখন তুলনায় কম তেলে টানা লম্বা পথ ওড়ার মতো বিমান এনেছিল, তখন এয়ারবাসের ‘আস্তাবল’ থেকে বেরোয় পেটে এক বারে ৫০০-৫৫০ যাত্রী নিয়ে উড়তে সক্ষম এ-৩৮০।
২০০৭ সালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের হাত ধরে এই ঢাউস বিমান প্রথম ডানা মেলে। তার পর থেকে মূল ক্রেতা এমিরেটস। ইকনমি, বিজনেস ও প্রথম শ্রেণি মিলিয়ে ৫০০-৫৫০ আসন ভর্তি হলে জ্বালানির চড়া খরচ সামলেও সংস্থা মোটা লাভ করতে পারে বলে এই বিমানের জনপ্রিয় হওয়া শুরু। বাড়তি পাওনা যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে ভিতরের অঢেল জায়গা। মূলত এই জোড়া কারণেই দুবাই থেকে লন্ডন, নিউ ইয়র্ক-সহ বিভিন্ন রুটে এই বিমানের সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বিপুল হওয়ায় এই বিমানের আসন খালি থাকলেই ক্ষতির পরিমাণও মারাত্মক। সমস্যার শুরু সেখানেই।
সম্প্রতি এমিরেটস ৩৬টি বিমানের বরাত দিয়েও পরে তা বাতিল করে। এয়ারবাস জানিয়েছে, এই বিমান তৈরির যা খরচ, তাতে ৪০০-৬০০টি বেচতে পারলে তবে লাভের মুখ দেখা যাবে। কিন্তু বরাত তার তুলনায় অনেক কম। আর সেই কারণেই এই বিমান বন্ধে দাঁড়ি পড়ার সিদ্ধান্তে এখন অনিশ্চিত সংস্থার ৩,০০০ কর্মীর ভবিষ্যৎ। সংস্থার অবশ্য দাবি, এ-৩২০ বিমান তৈরিতে নিয়োগ করা হবে সেই সমস্ত কর্মীকে।