পশ্চিমবঙ্গের অর্থ ও শিল্প মন্ত্রী অমিত মিত্র।
নোট বাতিলে অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে ৪.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা। জিএসটি চালুর পর থেকে রাজ্যগুলি ৭৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব খুইয়েছে। মোদী সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কী ভাবে কাজ করতে হয়, তা জানে না। এই সমস্ত অভিযোগ তুলে অমিত মিত্রের বিশ্লেষণ, এত সব কিছুর পরেও বণিকসভাগুলির চুপ করে থাকার কারণ কেন্দ্রের তরফে তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়া!
রাজ্যের অর্থ ও শিল্পমন্ত্রীর অভিযোগ, ভয় দেখানো আছে যে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললে বণিকসভাগুলির অনুষ্ঠানে কোনও মন্ত্রী যাবেন না। বিদেশি প্রতিনিধিদেরও বণিকসভার অনুষ্ঠানে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগে অমিত মিত্র দিল্লিতে বণিকসভা ফিকি-র মহাসচিব হিসেবে দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। সে কথা মনে করিয়েই শুক্রবার দিল্লির প্রগতি ময়দানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পশ্চিমবঙ্গ দিবসে তিনি বলেন, ‘‘আমার সময়ে বণিকসভাগুলি মুখ খুলত। কিন্তু এখন আতঙ্ক ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অ্যাসোচ্যাম নোট বাতিলের সমালোচনা করেছিল। তাদের ক্ষমা চাইতে হয়। শিল্পমহলের প্রধান মুখরা কেন মুখ খুলছেন না?’’
এ দিন দিল্লিতে বসে অমিত মিত্র প্রধানমন্ত্রীর নতুন ঘোষিত পোর্টালে ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য ৫৯ মিনিটে ঋণ মঞ্জুরের প্রকল্প নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর প্রশ্ন, শুধু ঋণের নীতিগত মঞ্জুরিতে লাভ কী?
অমিতবাবুর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ২০১৭-১৮ সালে ব্যাঙ্কগুলি ছোট-মাঝারি শিল্পকে ৪৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। লক্ষ্য ছিল ৩৮ হাজার কোটি। কারণ সরকার রাজ্য স্তরে ব্যাঙ্কিং কমিটিতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। নগদ জোগানের সমস্যা না থাকলে আরও বেশি ঋণ দিতে পারত। কিন্তু তা বলে ওই ঋণের অঙ্ক বাড়াতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাতে যাওয়া ঠিক নয়। তাঁর মতে, কেন্দ্র শীর্ষ ব্যাঙ্ক, সিবিআইয়ের সঙ্গে কী ভাবে চলতে হয়, তা জানে না।
শিল্পমন্ত্রীর অভিযোগ, নোট বাতিলের আগে ২০১৫-১৬ সালে বৃদ্ধি ছিল ৮.২%। ২০১৭-১৮ সালে তা ৬.৭ শতাংশে নেমেছে। সেই হিসেবে অর্থনীতির লোকসান ৪.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা। জিএসটি চালুর পরে রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি ৭৮,৭২৯ কোটি টাকা। কেন্দ্রকে তা মেটাতে হচ্ছে। কিন্তু ভুল রূপায়ণই তার আসল কারণ। ক্রেতা-বিক্রেতার তথ্য মেলানো যাচ্ছে না বলে অনেকে জিএসটি ফাঁকি দিয়ে কালো টাকা সিন্দুকে ভরছেন, এমনকী হাওয়ালায় তা বিদেশে পাচার করছেন বলে তাঁর দাবি।