প্রতীকী ছবি।
আমজনতাকে সুরাহা দিতে জিএসটি-র হার কমেছে ঠিকই। কিন্তু রেস্তরাঁর বিল কমছে না। বাজারে গিয়েও জিনিসপত্রে আগের দামই মেটাতে হচ্ছে।
দেশ জুড়ে এই ক্ষোভ সামলাতে মুনাফাখোর প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ তৈরি করল মোদী সরকার। এ বিষয়ে আজ অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। কেউ যদি মনে করেন, ব্যবসায়ীদের করের বোঝা কমা সত্ত্বেও তাঁরা দাম কমাচ্ছেন না, তা হলে তিনি এই কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। অভিযোগ সঠিক হলে, দাম কমানোর নির্দেশ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে জরিমানা বা জিএসটি-র নথিভুক্তিও বাতিল হতে পারে।
বুধবার থেকে ২০০টিরও বেশি পণ্যে জিএসটি কমেছে। শুধু ১৭৮টি পণ্যেই জিএসটি ২৮% থেকে কমে ১৮% হয়েছে। রেস্তরাঁতেও জিএসটি ১৮ ও ১২% থেকে কমে ৫% হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিনেই নানা জায়গা থেকে অভিযোগ উঠেছে, রেস্তরাঁগুলিতে একই দাম মেটাতে হচ্ছে। বিলে করের অংশটি কমেছে। কিন্তু খাবারের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রেস্তরাঁগুলির অবশ্য যুক্তি, তাঁরা ভুল করছেন না। ম্যাকডোনাল্ডসের অভিযোগ, কেন্দ্র জিএসটি কমিয়ে ৫% করেছে। কিন্তু কাঁচামালে মেটানো করে ছাড় বন্ধ করেছে। ফলে ব্যবসা চালানোর খরচ বেড়েছে। তা সত্ত্বেও আগের দামই নেওয়া হচ্ছে। অনেক রেস্তরাঁ মালিকের আবার অভিযোগ, দাম বাড়ায় রেস্তরাঁয় ভিড় কমেছে।
রাজস্ব দফতরের কর্তাদের পাল্টা অভিযোগ, যতদিন কাঁচামালে মেটানো করে ছাড় মিলছিল, তখনও রেস্তরাঁগুলি দাম কমায়নি। পুরো জিএসটি-র বোঝা গ্রাহকদের থেকে আদায় করেছে।
জিনিসপত্রের দাম নিয়েও একই নালিশ। সরকারি নির্দেশ হল, যে-সব পণ্যে জিএসটি কমেছে, সেখানে দাম কমিয়ে নতুন এমআরপি লেখা স্টিকার সেঁটে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা হচ্ছে না। মানুষের প্রশ্ন, ব্যবসায়ীরা ঠকালেও তাঁরা বুঝবেন কী করে! পকেটে করে কি ২০০টি পণ্যে করের তালিকা নিয়ে ঘোরা সম্ভব!
এই ক্ষোভের মুখেই আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জিএসটির আওতায় মুনাফাখোর প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ তৈরির সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে। জিএসটি আইনেই এর বিধান ছিল। কিন্তু কর কমানোর পরে মানুষের কাছে যাতে সুবিধা পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করতে চায় কেন্দ্র। বৈঠকের পরে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, ‘‘গত কাল কর কমার পরে যে-ভাবে আজই দ্রুত সিদ্ধান্ত হল, তাতে ক্রেতারা আশ্বস্ত হবেন যে, সরকার পাশেই রয়েছে।’’
আতসকাচ
•
জিএসটি কমলেও দাম চড়িয়ে রেখে বেআইনি লাভ ঠেকাতে মুনাফাখোর প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষ গড়ায় সায় মন্ত্রিসভার
•
কর কমা সত্ত্বেও পণ্য বা পরিষেবার দাম কমছে না মনে হলে অভিযোগ জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ
কাজের পদ্ধতি
•
শীর্ষে সচিব পর্যায়ের অফিসার
•
জাতীয় স্তরে স্থায়ী কমিটি
•
রাজ্য স্তরে স্ক্রিনিং কমিটি। অভিযোগ জমা তাদের কাছেই
•
তদন্ত করবেন কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর পর্ষদের ডিরেক্টর জেনারেল (সেফগার্ডস)
শাস্তির বিধান
•
অভিযোগ সঠিক হলে দাম কমানোর নির্দেশ
•
বেআইনি মুনাফা ফেরত বা গ্রাহক কল্যাণ তহবিলে জমা
•
প্রয়োজনে জরিমানা, জিএসটি নথিভুক্তি বাতিল