জিডিপি মাপার নতুন ফিতেয় মনমোহন জমানার বৃদ্ধির হার কমতেই তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বলেছিলেন, ইউপিএ আমলে বৃদ্ধি বেশি থাকার ফানুস ফুটো হয়ে যাচ্ছে এতে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই একই মাপকাঠিতে পা পিছলে গেল মোদী সরকারেরও। জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার নেমে গেল ৭.১ শতাংশে। গত তিন ত্রৈমাসিকের মধ্যে সব থেকে কম। যা দেখে বিরোধীদের কটাক্ষ, পূর্বসূরির আমলে বৃদ্ধির হার খাটো করে দেখাতে মোদী সরকারের হিসেবের কেরামতির কমতি নেই। কিন্তু নিজেদের সময়ে ওই হারকে চাঙ্গা করার দাওয়াই তাদের অধরা।
অর্থ মন্ত্রক থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ— সবার মতে, ভারত যে ভাল বৃদ্ধির হার ধরে রাখতে পেরেছে, এই পরিসংখ্যান তার প্রমাণ। চিনকে টপকে বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির দেশের তকমা ধরে রাখার কৃতিত্ব প্রচারেও খামতি নেই। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর পরেও ধাক্কা খাওয়া এই বৃদ্ধির হারে অস্বস্তি সেই থেকেই যাচ্ছে। হয়তো সেই কারণেই আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গ মেনেছেন যে, এই হার কিছুটা হতাশাজনক।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে ১০% বৃদ্ধির স্বপ্ন ফেরি করতেন নরেন্দ্র মোদী। অভিযোগ করতেন, তা সম্ভব হচ্ছে না ইউপিএ সরকারের নীতিপঙ্গুত্বের কারণে। তাই এখন নিজেদের পাঁচ বছর মেয়াদের শেষ পাকে এসেও বৃদ্ধি সেই ৮ শতাংশের নীচেই থেকে যাওয়া ভোটের মুখে নিঃসন্দেহে চিন্তায় রাখবে তাঁদের।
২০১৫ সালে জিডিপি মাপার নতুন পদ্ধতি ও তার জন্য ভিত্তিবর্ষ বদল নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, মোদীর আমলে বৃদ্ধিকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখাতেই এই উদ্যোগ। অনেকে বলছেন, এত কিছুর পরেও সেই মাপকাঠিতে বৃদ্ধিকে ৮ শতাংশে নিয়ে যেতে পারেনি মোদী সরকার।
এ দিন কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়িয়েছে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের বৃদ্ধি শ্লথ হওয়া। অক্টোবরে তা হয়েছে ৪.৮%।