সমিতিগুলিতে বসবে এটিএম।
বছর তিনেক আগেও ধুঁকছিল রাজ্যের বহু প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতি। তবে সমিতি কর্তাদের দাবি, সারদা-সহ বিভিন্ন ভুয়ো লগ্নি সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হওয়ায় ছবিটা পাল্টাচ্ছে দ্রুত। বাড়ছে আমানত। সমিতিগুলিতে চালু হতে চলেছে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম (সিবিএস)। বসবে এটিএম-ও।
রাজ্য সমবায় দফতরের কর্তারা জানান, চলতি অর্থবর্ষে ১৩৪ কোটি টাকা ঢেলে সেগুলি আধুনিকীকরণের কাজে হাত দিয়েছেন তাঁরা। প্রথমে এ জন্য ২,৬৩১টি সমিতিকে বাছা হয়েছে। বস্তুত, এই সব সমিতিতে জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সায় থাকায় তারা আমানত সংগ্রহ করতে পারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সায় লাগে না।
সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়ের দাবি, বহু গ্রামে ব্যাঙ্ক নেই। সমিতি সেই অভাব পূরণ করবে। তিনি বলেন, ‘‘কৃষি সমবায়ে আমানত সংগ্রহ বাড়ায় পরিষেবা উন্নত হয়েছে। সেই টাকা সুরক্ষিত রাখতেই সেগুলির আধুনিকীকরণে জোর দিচ্ছে রাজ্য।’’
নতুন পথে
• প্রথম দফায় আধুনিকীকরণ ২,৬৩১টি সমবায় সমিতির
• চালু হচ্ছে কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা
• বসবে এটিএম
• খরচ ১৩৪ কোটি টাকা
• লক্ষ্য, আমানত সুরক্ষিত রাখা
এক সময়ে আমানতের অভাবে বহু সমিতি থেকে বেশি ঋণ পাচ্ছিল না চাষি ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। অনেকগুলিতে লোকসানও হয়। সমিতি কর্তাদের দাবি, বেশ কিছু ভুয়ো লগ্নি সংস্থার ঝাঁপ বন্ধের পরে তাঁরা মানুষকে বোঝান, এখানে টাকা রাখলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম মতো সুদ ও ব্যবসার জন্য ঋণও পাবেন। একাংশের মতে, বহু গ্রামে ব্যাঙ্কের অভাব ও ডাক-পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ গ্রাহক টানার কাজ সহজ করেছে।
মন্ত্রীর আশ্বাস, জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে সরকার সমিতিতে কড়া নজর রাখবে। উল্লেখ্য, সমিতিগুলি আমানতের ৭০% টাকা জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে পাঠায়। ৩০% কাজে লাগায় ঋণ দিতে।
শুধু হাওড়াতেই ১১০টি সমিতি আমানত সংগ্রহের অনুমতি পেয়েছে। আমতা-২ ব্লকের কাশমলি প্রাথমিক কৃষি উন্নয়ন সমিতির বছর তিনেক আগে পর্যন্ত জমা ছিল ৬০ লক্ষ টাকা। কর্তাদের দাবি, এখন প্রায় এক কোটি। নতুন গ্রাহকদের সিংহভাগই এক সময়ে ভুয়ো লগ্নি সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিত হন। সমিতির ম্যানেজার শক্তিপদ দলুই বলেন, ‘‘ঋণ দিয়ে আমাদের যেমন আয় হয়, তেমনই গ্রামের মহিলারা খেয়ে-পরে বাঁচেন।’’ কিছু লগ্নি সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিত হন কাশমলির বাসিন্দা জাকির খান। তিনি বলেন, ‘‘এখন সমিতি থেকে ব্যবসার জন্য ঋণ পাচ্ছি।’’