হামলার আতঙ্ক মুছতে ডাক আগামী সপ্তাহেই

লগ্নিতে আস্থা ফেরাতে সম্মেলন বাংলাদেশের

ঢাকায় হোলি আর্টিজান বেকারির হামলা কিছুটা হলেও টলিয়ে দিয়েছে লগ্নিকারীদের আস্থা। বাংলাদেশে বিনিয়োগ-সিদ্ধান্তের পথে কাঁটাতার হয়ে দাঁড়ানোর রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে নিরাপত্তার অভাব নিয়ে আতঙ্ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:২০
Share:

কলকাতায় রিজভি।-নিজস্ব চিত্র

ঢাকায় হোলি আর্টিজান বেকারির হামলা কিছুটা হলেও টলিয়ে দিয়েছে লগ্নিকারীদের আস্থা। বাংলাদেশে বিনিয়োগ-সিদ্ধান্তের পথে কাঁটাতার হয়ে দাঁড়ানোর রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে নিরাপত্তার অভাব নিয়ে আতঙ্ক। তাই তা মুছে ফের লগ্নিকারীদের ভরসা ফেরত পেতে আগামী সপ্তাহেই ঢাকায় সম্মেলন আয়োজন করছে শেখ হাসিনার সরকার।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কলকাতায় বণিকসভা আইসিসি-র ৮৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈদেশিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভি। হামলার ওই ঘটনা যে বণিকমহলে শঙ্কার মেঘ তৈরি করতে পারে, তা অস্বীকার করেননি তিনি। আর সেই কারণেই সম্মেলন আয়োজনের এই সিদ্ধান্ত।

এ দিন অনুষ্ঠান শেষে রিজভি জানান, হামলার ঘটনায় সারা বিশ্ব তাঁদের পাশে। সকলেই বুঝছেন, এমন নাশকতা যে কোনও দেশে, যে কোনও শহরে হতে পারে। ফলে বাংলাদেশ ছাড়ার কথা লগ্নিকারীরা ভাবছেন না। তবু যেটুকু সংশয় বাসা বেঁধেছে, তা কাটাতেই বাংলাদেশ সরকার এই সম্মেলন আয়োজন করছে বলে তাঁর দাবি। রিজভি বলেন, ‘‘বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে তাঁদের মনের কথা জানতে চাই। তাঁদের থেকেই জানব, কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাঁরা আশা করছেন। জানাব নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের যাবতীয় পদক্ষেপও।’’

Advertisement

কোনও বড় শহরে জঙ্গিহানা এই প্রথম নয়। বরং উদাহরণ ভুরিভুরি। তা সে নিউ ইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা হোক বা লন্ডনে লাদেন-হানা। খাস ভারতই সাক্ষী বাণিজ্য-রাজধানী মুম্বইয়ে ২৬/১১-র রক্তক্ষয়ের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবারই এ ধরনের হামলার পরে সেখানকার নিরাপত্তা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। সংশয় তৈরি হয়েছে এর ফলে সেখানে লগ্নিতে ভাটা পড়বে কি না, তা নিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশকে এর জন্য খেসারত কিছুটা বেশিই গুনতে হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের যুক্তি, একে উন্নয়নশীল দুনিয়ার দেশ, তার উপরে আড়েবহরে ছোট। তাতে আবার আঘাত এসেছে খাস ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত অঞ্চলে। স্বাভাবিক ভাবেই তাই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিদেশি লগ্নি সরে যাওয়া নিয়ে।

এই আশঙ্কা দূর করতে যে তাঁরা বদ্ধপরিকর, তা স্পষ্ট করেছেন রিজভি। সমস্যার মূলে পৌঁছতে যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সেতু গড়ার কাজ সরকার শুরু করেছে বলে তাঁর দাবি। সাম্প্রতিক ঘটনায় হামলাকারীদের অধিকাংশই অভিজাত স্কুলে পড়াশোনা করেছে। পারিবারিক অবস্থাও ভাল। রিজভি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে পাঠ্যক্রমে গলদ আছে কি না। তৈরি করা হচ্ছে নিখোঁজ ছেলে-মেয়েদের তথ্য ভান্ডারও।

এ দিন আইসিসি-র মঞ্চে দাঁড়িয়েও রিজভি এবং হাসিনার আর্থিক উপদেষ্টা মাসিউর রহমান শিল্পমহলকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ডাক দেন। ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলেন। তার জন্য যে পরিকাঠামো গড়া জরুরি, তা-ও স্পষ্ট করে দেন দু’জনে। সেই পরিকাঠামো তৈরির জন্য লগ্নিকারীদের আহ্বান জানান তাঁরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট মাতলুব আহমেদ ও আইসিসি-র প্রেসিডেন্ট আদিত্য অগ্রবাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন