আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য সুরক্ষিত তো? এ বার বিষয়টি ভাবার সময় এসে গিয়েছে। কেননা সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে এ বিষয়ে উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এসেছে।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রায় ১ কোটি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। আর এ ধরনের তথ্য কেনাবেচার একটা বিশাল চক্র চলছে দেশ জুড়ে। অতএব সেই ১ কোটি মানুষের মধ্যে আপনিও হয়ত রয়েছেন! এ ধরনের চক্র চালাত এমন দু’জনকে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তবে পুলিশের অনুমান, ধৃতরা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। ধৃতেরা হলেন আশিস কুমার ঝা এবং পুরান গুপ্ত।
কী ভাবে এরা চক্রটা চালাত তা জানলে চোখ কপালে উঠবে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে ২০১৩-তে টেলি-কলিংয়ের কাজের পাশাপাশি একটি ওয়েব পোর্টাল তৈরি করে সেখানে স্বাস্থ্যবিমা বিক্রি করতেন আশিস। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সেলস একজিকিউটিভ হিসাবে কাজ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতাকেই প্রতারণার কাজে লাগিয়েছেন। আশিসের সঙ্গে পুরান গুপ্তর পরিচয় হয়। আশিস তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করতেন অর্থের বিনিময়ে। ২০১০-এ পুরান ডেটা এন্ট্রির একটি অফিস খোলেন। সেখানে ডেটা মার্কেট রিসার্চ এবং অনলাইন প্রোমোশনের কাজও হত। পুলিশ জানিয়েছে, পুরান ব্যাঙ্ক, কল সেন্টারের মতো জায়গাগুলি বেছে নিতেন গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। এ কাজে তাঁকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কোনও ব্যক্তি পুরানকে সাহায্য করতেন।২০-২৫ পয়সার বিনিময়ে সেই তথ্য কিনে নিতেন পুরান। সেগুলো আবার আশিসের মতো লোকেদের কাছে বিক্রি করতেন। পুরো চক্রটা চেনের মতো চলে।
আরও শিউরে উঠবেন শুনে যে, কোন গ্রাহক ব্যাঙ্কে কত টাকা লেনদেন করছেন তার ভিত্তিতে তাঁদের আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে ফেলা হত। মহিলা ও প্রবীণ নাগরিকদের সহজ শিকার বানাতেন আশিসরা।ছাত্রদের রাখা হত আলাদা ক্যাটাগরিতে। তার পর আশিসের মতো লোকেরা সেই তথ্য নিয়ে শিকারিকে ফাঁদে ফেলতেন। ব্যস, একটা ফোন, তার পরই একটা এসএসএস….আর আপনার টাকা গায়েব!
ব্যাঙ্ক থেকে মাঝে মধ্যেই এসএসমএস এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতারণা থেকে বাঁচতে নানা রকম তথ্য দেওয়া হয়। কিন্তু সেই ব্যাঙ্ক থেকেই আপনার তথ্য বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মাত্র ২০-২৫ পয়সার বিনিময়ে, সেটা আপনি জানতেও পারছেন না।