অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
বেশির ভাগ সময়েই ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি একজোটে বিভিন্ন সংস্থাকে ঋণ দেয়। অথচ সেই ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হলে কোন পথে তা ফেরত পাওয়া যাবে, কত টাকা ছে়ড়ে দেওয়া (হেয়ার কাট) হবে, তা নিয়েই অনেক ক্ষেত্রেই এক মত হতে পারে না তারা। ফলে টাকা উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করতেই লেগে যায় দীর্ঘ দিন। পড়তে থাকে বন্ধকী সম্পত্তির দর। তখন তা বিক্রি করে ঋণের টাকা ফেরতের সম্ভাবনা কমে। এই সমস্যা এড়াতে এ বার নিজেদের মধ্যে চুক্তি করল ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। যেখানে নির্দিষ্ট করে বলা থাকবে জোট বেঁধে দেওয়া ধার অনাদায়ি ঋণে পরিণত হলে কী ভাবে তা উদ্ধার করা হবে, তার পদ্ধতি।
প্রাথমিক ভাবে ১৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক-সহ ২৪টি ব্যাঙ্ক সই করেছে। অন্যান্য ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থা পর্ষদের সায় পেলে শীঘ্রই এতে সামিল হবে। ৫০-৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত অনাদায়ি ঋণ যৌথ ভাবে আদায় করতে কী শর্ত মানা হবে, তা-ই চুক্তিতে বলা হয়েছে। তার বেশি অঙ্কের ক্ষেত্রে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাকা উদ্ধারের পথ ঠিক হলে জোটের সমস্ত ঋণদাতাই তা মানতে বাধ্য। কোনও ঋণদাতা শর্তে রাজি না হলে, ঋণে নিজের অংশীদারি বিক্রি করতে বা অন্যের অংশীদারি কিনতে পারবে। সোমবার অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, ব্যাঙ্কিং শিল্পের সমস্যা জুঝতে এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
টাকা উদ্ধারে
• অনুৎপাদক সম্পদ ছাঁটতে এক জোট হয়ে কাজ করতে চুক্তি ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির
• অনাদায়ি ঋণ ৫০ কোটি বা তার বেশি হলে, তা আদায়ে কাজ করবে ঋণদাতাদের জোট।
• জোটে যার ঋণ সবচেয়ে বেশি, সে-ই হবে লিড ব্যাঙ্ক।
• নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা পরিকল্পনা তৈরি করে পেশ করবে বাকিদের কাছে।
• ৬৬ শতাংশের সায় মিললেই, পরিকল্পনা মেনে কাজ শুরু হবে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এর ফলে অনাদায়ী ঋণ উদ্ধারে দ্রুত একমত হতে পারবে ঋণদাতারা। ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন বলেন, ‘‘ঋণের কত শতাংশ ছাড়া হবে, তা নিয়ে অনেক সময়ে একমত হতে পারে না ব্যাঙ্ক-গুলি। চুক্তিতে এর শর্তগুলি ঠিক করে দেওয়ায় দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যাবে বলে আশা।’’