উচ্ছ্বাস: হাইকোর্টের রায়ের পরে গেটের সামনে কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে আপাতত বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটতে হচ্ছে না বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালসকে (বিসিপিএল)। সংস্থার উদ্বৃত্ত জমির একাংশ বিক্রি ও বিলগ্নিকরণ নিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাব মঙ্গলবার খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে মামলা করেছিল শ্রমিক-কর্মী ইউনিয়নগুলি। মঙ্গলবার সেই মামলারই রায় দেন ওই বিচারপতি। তবে আদালতের রায় না দেখে মন্তব্য করতে চাননি সংস্থাটির নির্বাহী ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিএম চন্দ্রাইয়া।
এই রায়ে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন শ্রমিক-কর্মীরা। তবে ভবিষ্যতে ফের বিষয়টি আইনি জটিলতার মুখে পড়বে বলে তাঁদের আশঙ্কা। বস্তুত, কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ এ দিন জানান, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্র হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করবে।
কর্মী সংগঠনগুলির দাবি, ২০১৬-র ডিসেম্বরে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয়, বিসিপিএল-সহ চার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার উদ্বৃত্ত জমির একাংশ বেচে দেনা মেটানো হবে ও কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হবে। খতিয়ে দেখা হবে বিলগ্নিকরণের সম্ভাবনাও। কর্মীদের আশঙ্কা, রসায়নবিদ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যশালী কারখানাটি বেচাই কেন্দ্রের লক্ষ্য। অথচ সংস্থাটি আগে লোকসানে চললেও, ২০১৬-’১৭ সালে লাভ করেছে। সূত্রের দাবি, এ বছরও ভাল ব্যবসার সম্ভাবনা।
তবে কারখানায় আপাতত স্বস্তির ছবিই ধরা পড়েছে এ দিন। সিটু-র দাবি, তারাই প্রথম আদালতের দ্বারস্থ হলেও পরে তৃণমূল কংগ্রেস ও এআইটিইউসি-সহ চারটি ইউনিয়নই সামিল হয়। রায়ের পরে মৃণাল চক্রবর্তী, শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু বসুর মতো বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাই একসঙ্গে ‘লড়াই’ করার কথা বলেছেন।
মামলার শুনানিতে ইউনিয়নের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও শামিম আহমেদ বলেছিলেন, দেশের প্রথম ওষুধ তৈরির এই কারখানাটিতে এখনও কম দামে উন্নত মানের বহু ওযুধ তৈরি হয়। কেন্দ্রের উচিত, বিলগ্নিকরণের বদলে জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে সংস্থাটি আরও উন্নত করা। তবে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ শুনানিতে জানান, সংস্থা লাভের মুখ দেখছে না। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ওযুধ সংস্থা মিলিয়ে উৎপাদিত ওষুধপত্রের ০.০৩% তৈরি হয় বিসিপিএলে। যা ধর্তব্যের মধ্যে নয়। তা ছাড়া, সংস্থাটি বন্ধ হচ্ছে না। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত, উদ্বৃত্ত জমি বেচে দেনা মেটানোর পরে সংস্থার ৫০% শেয়ার হস্তান্তর ও পরিচালন ব্যবস্থায় বদল আনা। যদিও সিটু নেতা নেপালদেব ভট্টাচার্যের প্রশ্ন, ব্যবসার সুযোগ সদ্ব্যবহার না করে কেন বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটা?