চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসেই লাভের মুখ দেখল বেঙ্গল কেমিক্যালস (বিসিপিএল)। লাভ হয়েছে ১.১৬ কোটি টাকা। গত ৬৩ বছরের মধ্যে এই প্রথম লাভ করল সংস্থাটি। সংস্থা-কর্তাদের আশা, ২০১৬-’১৭ আর্থিক বছর শেষে মুনাফার মোট অঙ্ক বেড়ে ৩ থেকে ৫ কোটি টাকায় দাঁড়াবে।
বাঙালিকে ব্যবসামুখী করতে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ১৯০১-এ চালু করেন এই সংস্থা। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই খারাপ হতে থাকে সংস্থার হাল। মানিকতলার প্রথম কারখানা থেকে পরে পানিহাটি এবং মুম্বই ও কানপুরেও কারখানা বিস্তৃত করা সংস্থাটির ১৯৭৭-এ জাতীয়করণ হয়। এক সময়ে যতটা নাম কুড়িয়েছিল সংস্থা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই গরিমা হারিয়ে ১৯৯২ সালে বিআইএফআরে চলে যায় তারা।
কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রকের সাম্প্রতিক একটি বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থার আকাশে নতুন করে শঙ্কার মেঘ জমে। তাতে দেশের সমস্ত রুগ্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলি বন্ধ করা ও তার ভবিষ্যৎ রূপরেখা জানতে চেয়েছিল কেন্দ্র। তখনই অবশ্য সংস্থাটির কর্তারা আশার কথা শুনিয়ে দাবি করেন, খরচ কমিয়ে ও বাজারে নতুন পণ্য এনে ঘুরে দাঁড়াতে চান তাঁরা। সোমবার বিসিপিএল-এর এমডি তথা ডিরেক্টর (ফিনান্স) পিএম চন্দ্রাইয়া এবং অন্য কর্তারা জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া ষাণ্মাসিকে সংস্থার নিট মুনাফা হয়েছে ১.১৬ কোটি টাকা। আয় ৫১.৩৭ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে পুনর্গঠনের পরেও সংস্থার হাল খারাপ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ২০১৩-’১৪ সালে আয় কমে দাঁড়ায় ১৭ কোটি টাকায়। পরের বছর ২০১৫-’১৬ সালে অবশ্য আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৯৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে আয় ১১০-১২০ কোটি টাকায় পৌঁছবে বলেই দাবি তাঁদের।
সম্প্রসারণের পরে মানিকতলা কারখানা আগামী নভেম্বেরর শেষে বা ডিসেম্বেরর গোড়ায় বাণিজ্যিক ভাবে চালু করার কথা এ দিন জানান কর্তারা। ওষুধ ব্যবসা থেকে এ বছর ৭৫-৮০ কোটি টাকা আয়েরও আশা করছেন তাঁরা।
তবে প্রায় ১৫টি রাজ্য তাঁদের ওষুধ কিনলেও এ রাজ্য থেকে তাঁরা কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিসিপিএল-কর্তাদের। কারণ সংস্থার ওযুধের দাম নির্দিষ্ট। কিন্তু রাজ্য দরপত্র আহ্বান করে ওষুধ কেনে। বিসিপিএল তাতে অংশ নিলেও অন্য সংস্থা কম দর দিলে বরাত পেয়ে যায়।
এ দিকে, ফের সাপে কাটার ওষুধ তৈরি করতে মানিকতলা কারখানার যে-সম্প্রসারণ প্রয়োজন, তার প্রস্তাব গত বছর সংস্থা জমা দিয়েছে ওষুধ মন্ত্রকে। বাজেটে অর্থ বরাদ্দ হলে তা ফের তৈরি করা সম্ভব বলে জানান কর্তৃপক্ষ