ভারতমালায় শিকে ছিঁড়তে পারে রাজ্যের

এই প্রকল্পে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা বলেছে কেন্দ্র। যে ৪৪টি আর্থিক করিডর তৈরির কথা প্রকল্পে বলা হয়েছে, তার মধ্যে দু’টি সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১৮
Share:

লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে সারা দেশে প্রায় ৮৪ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে ‘ভারতমালা’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে মোদী সরকার। তা বাস্তবায়িত হলে সুবিধা পাবে পশ্চিমবঙ্গও।

Advertisement

এই প্রকল্পে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা বলেছে কেন্দ্র। যে ৪৪টি আর্থিক করিডর তৈরির কথা প্রকল্পে বলা হয়েছে, তার মধ্যে দু’টি সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত। এক, ১,৮৫৪ কিমি দীর্ঘ মুম্বই-কলকাতা করিডর। দুই, ৫১৬ কিমি দীর্ঘ খড়্গপুর-শিলিগুড়ি আর্থিক করিডর। বিভিন্ন করিডরের মধ্যে রাস্তা ও ইতিমধ্যে তৈরি হওয়া সড়কে যানজট কাটাতে বাইপাস তৈরির প্রকল্পেও সামিল করার কথা রাজ্যকে।

সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের সচিব যুধবীর সিংহ মালিকের দাবি, ‘‘এখন কলকাতা-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ৫৫% রাস্তাই চার লেনের। কিন্তু বাকি ৪৫% দু’লেনের রাস্তা। এই প্রকল্পে কলকাতা-মুম্বই আর্থিক করিডর গড়া হলে আর এই সমস্যা থাকবে না।’’

Advertisement

অটলবিহারী বাজপেয়ীর মুকুটে সাফল্যের অন্যতম পালক ছিল ‘সোনালি চতুর্ভুজ’। ১৯৯৮ সালে দেশের চারটি প্রধান শহরকে জুড়ে দিতে সোনালি চতুর্ভুজ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন বাজপেয়ী। তার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম করিডর সড়কের কাজও জুড়ে যায়। বাজপেয়ীর পথে হেঁটেই ভারতমালার কাজ শুরু করতে চাইছে মোদী সরকার।

সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলছেন, প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকার এই সড়ক পরিকাঠামো তৈরির লক্ষ্য দেশে বেসরকারি লগ্নি, অর্থনৈতির কর্মকাণ্ড, সর্বোপরি কর্মসংস্থানের পথ প্রশস্ত করা। যে কারণে ১৪.২ কোটি শ্রম দিবস তৈরির কথা গোড়াতেই বলেছে তারা। মোদী সরকারের পাখির চোখ যে ২০১৯-এর লোকসভা ভোট, সেই ইঙ্গিত মিলেছে গডকড়ীর কথায়। তিনি বলেন, ‘‘ভারতমালায় ৬৫,৪০০ কিমি জাতীয় সড়ক তৈরি হবে। তার মধ্যে প্রথম দফায় ৩৪,৮০০ কিমি রাস্তা তৈরি হবে। সময় রয়েছে ২০২২ পর্যন্ত। কিন্তু এই সরকারের পাঁচ বছর শেষ হওয়ার আগেই আমরা সিংহভাগ কাজ শুরু করে দিতে চাইছি।’’

বাজার থেকে টাকা তুলতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই বন্ড ছাড়বে। বেসরকারি লগ্নিও আনা হবে। তৈরি সড়ক থেকে টাকা তুলতে ‘টোল-অপারেট-ট্রান্সফার’ ভিত্তিতে ঠিকা দেওয়া হবে। সরকার টাকা জোগাবে পেট্রোল-ডিজেলে বসানো শুল্ক থেকে।
তাই শুল্ক কমাতে হলে তা চিন্তার কারণ হতে পারে বলে মেনে নিয়েছেন গডকড়ী। বড় চ্যালেঞ্জ হবে জমি অধিগ্রহণও। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার কটাক্ষ, ‘‘সবটাই আসলে মায়াজাল।’’

রাজনৈতিক মহলের মতে, সোনালি চতুর্ভুজ করেও বাজপেয়ী পরের বার ক্ষমতায় ফিরতে পারেননি। ভারত-মালার রাস্তা ধরে মোদী ক্ষমতায় ফেরেন কি না, সেটাই এখন দেখার।

পশ্চিমবঙ্গের ঝুলিতে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন