মরিয়া: বন্ধ কারখানায় ছাঁটের খোঁজ। হরিয়ানার পানিপথে। ছবি: রয়টার্স।
নোটবন্দির পরে সমস্যায় পড়েছিল ছোট-মাঝারি ব্যবসা। তা কিছুটা সামাল দিতে না দিতেই তড়িঘড়ি জিএসটি কার্যকরের ধাক্কা। এর ফলে যে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে, তা বুঝেই জিএসটি আইন ও কর কাঠামোয় একের পর এক সংশোধন করেছে কেন্দ্র। কিন্তু তাতে তেমন সুরাহা মিলেছে কি? ব্যবসায়ীদের দাবি, নতুন কর ব্যবস্থা চালু হওয়ায় পরে বিভিন্ন কারণে তাঁদের মুনাফা আদতে ১০ থেকে ১৫% কমেছে।
রফতানি সংস্থাগুলির বহুদিনের অভিযোগ, আগে মেটানো কর ফেরতে দেরি হওয়ায় তাদের পুঁজি আটকে থাকে। এ বার অন্যান্য ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরাও একই অভিযোগ করছেন। ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহেশ সিংহানিয়ার কথায়, ‘‘ভ্যাটের আমলে সারা বছরের রিটার্ন জমা দিতে আমার খরচ হত ২০ হাজার টাকা। এখন ব্যয় হচ্ছে ১ লক্ষ টাকারও বেশি।’’ ক্যালকাটা চেম্বার অব ট্রেডের চেয়ারম্যান এমিরিটাস ফিরোজ আলি বলেন, ‘‘বিক্রির পর দাম পেতে ৯০ থেকে ১২০ দিন লাগে। জিএসটিতে কর মেটাতে হচ্ছে ৪৫ দিনের মধ্যে। অতএব কর মেটানোর অন্তত ৪৫-৭৫ দিন পরে পণ্যের দাম হাতে পাচ্ছি।’’
ভদ্রেশ্বরে জ্যাম, জেলি, ঘিয়ের ব্যবসায়ী ইন্দ্রজিৎ দত্তের বক্তব্য, মাসের গোড়াতেই জিএসটি মেটাচ্ছি। কিন্তু ডিলারদের থেকে পণ্য বিক্রির টাকা আসতে মাস গড়াচ্ছে। ফলে কার্যকরী মূলধনে টান পড়ছে তাঁরও।
জিএসটি-অভিযোগ
• মুনাফা কমেছে ১০-১৫%।
• বেড়ে গিয়েছে কর মেটানোর খরচ।
• হিসেবের জন্য বাড়তি লোক রাখতে হচ্ছে।
• রিফান্ড পেতে দেরি। আটকে কার্যকরী মূলধন।
• কর কাঠামোয় ঘন ঘন পরিবর্তন।
বেকায়দায় বাঁশদ্রোণীর ফ্যান ক্লাস্টারের সংস্থাগুলিও। ছোট-মাঝারি শিল্পের সংগঠন ফ্যাকসির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সেনাপতির কারখানা রয়েছে ওই ক্লাস্টারে। তিনি জানান, আগে ১৪.৫% ভ্যাট দিতে হলেও এখন কর বেড়ে হয়েছে ১৮%। উল্টো দিকে, নামী ব্র্যান্ডের কর ২৭% থেকে কমে হয়েছে ১৮%। ফলে দু’ধরনের ফ্যানের দামের ফারাক কমেছে। ব্যবসা হারাচ্ছে স্থানীয় সংস্থাগুলি।