বৈঠকের পরে বেঙ্কাইয়া নায়ডু, অরুণ জেটলি ও রাজীব মহর্ষি। ছবি: পিটিআই।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আইওসি এবং এনটিপিসি-র শেয়ার বিক্রিতে সায় দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটি। নতুন সার-নীতিতেও অনুমোদন দিল তারা। এর ফলে ইউরিয়ায় ৪,৮০০ কোটি টাকা ভর্তুকি কমবে বলে অনেকের ধারণা। একই সঙ্গে, খনন শিল্পে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য চিনের সঙ্গে ভারত যে সমঝোতাপত্র সই করবে, সে বিষয়েও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বৈঠকে বসে মন্ত্রিসভার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটি। তার পরে এক শীর্ষ কর্তা বলেন, তেল সংস্থা আইওসি-তে সরকারি অংশীদারির ১০ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা এনটিপিসি-তে ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই বিলগ্নিকরণ থেকে মোট ১৩,৬০০ কোটি টাকা কেন্দ্রের ভাঁড়ারে আসার সম্ভাবনা।
ডিজেলের দাম বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরে গত ১৩ মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার আইওসি-র শেয়ার বেচবে কেন্দ্র। এনটিপিসি-র শেয়ারও এর আগে শেষ বার ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি করা হয়। এখন এই দুই সংস্থায় কেন্দ্রের অংশীদারি যথাক্রমে ৬৮.৫৭ ও ৭৪.৯৬ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ বার দুই সংস্থার বিলগ্নিকরণ থেকে যথাক্রমে ৮,০০০ ও ৫,৬০০ কোটি টাকা ঘরে তুলবে সরকার।
গত পাঁচ বছরই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচে রাজকোষে টাকা আনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এ বারও বাজেটে সেই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। শুধু তা-ই নয়, রাজকোষ ঘাটতিকে জিডিপির ৩.৯ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার ক্ষেত্রেও ওই লক্ষ্যপূরণ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। আর সেই কারণেই এ বার আর বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়াকে আর্থিক বছরের শেষ কয়েক মাসের জন্য ফেলে রাখেনি মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা আরইসি-র ৫ শতাংশ শেয়ার বেচে ১,৫৫০ কোটি টাকা ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে। এ বার ঘোষণা হল আইওসি এবং এনটিপিসি-র কথা। এ ছাড়াও ভেল, ওএনজিসি-র ৫ শতাংশ করে এবং নালকো, এনএমডিসি-র ১০ শতাংশ শেয়ার বিক্রিতে ইতিমধ্যেই অনুমোদন দিয়ে রেখেছে কেন্দ্র। পরিকল্পনা রয়েছে ন্যাশনাল ফার্টিলাইজার্স, হিন্দুস্তান কপার, আইটিডিসি-র মতো আরও বেশ কিছু সংস্থার শেয়ার বেচারও।
দুই সংস্থার বিলগ্নিকরণে সায় দেওয়ার পাশাপাশি এ দিন মন্ত্রিসভার তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নতুন সার নীতিতে ছাড়পত্র প্রদান। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে দেশে সারের বার্ষিক উৎপাদন বেড়ে হবে ২০ লক্ষ টন। সেই সঙ্গে প্রায় ৪,৮০০ কোটি টাকা কমবে এই খাতে ভর্তুকিও। ৫০ কেজির সারের বস্তার দাম অবশ্য বাড়ছে না। তবে নিমের আস্তরণ দেওয়া ইউরিয়ার ব্যাগে ১৪ টাকা বাড়তি গুনতে হবে চাষিদের।
এ ছাড়া, খনন ক্ষেত্রে চিন-ভারত চুক্তি সই হলে, তাতে দু’দেশের মধ্যে তথ্য, প্রযুক্তি ইত্যাদির আদান-প্রদান বাড়বে বলেও কেন্দ্রের দাবি।