অনাদায়ি ঋণে পুঁজিতে টান ছোট শিল্পের

গত চার বছরে ব্যাঙ্কগুলিতে লাফিয়ে বেড়েছে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা। ২০১৪ সালের মার্চে যার মোট পরিমাণ ছিল ২.৪ লক্ষ কোটি টাকা, তা-ই দাঁড়িয়েছে ১০.২৫ লক্ষ কোটিতে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

অমিত মিত্র।

নোটবন্দি কিংবা তড়িঘড়ি জিএসটি চালু তো বটেই। ব্যাঙ্কে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যারও সব থেকে বেশি খেসারত দিচ্ছে ছোট-মাঝারি শিল্পই। শুক্রবার ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে এক আলোচনা সভায় এই দাবি করলেন রাজ্যের অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র।

Advertisement

তাঁর মতে, গত চার বছরে ব্যাঙ্কগুলিতে লাফিয়ে বেড়েছে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা। ২০১৪ সালের মার্চে যার মোট পরিমাণ ছিল ২.৪ লক্ষ কোটি টাকা, তা-ই দাঁড়িয়েছে ১০.২৫ লক্ষ কোটিতে। যদিও মূলত বড় শিল্পের ধার শোধ করতে না পারাই এই বোঝা বাড়ার কারণ। কিন্তু এর মাসুল সব চেয়ে বেশি গুনতে হচ্ছে ছোট-মাঝারি শিল্পকেই। ব্যাঙ্কগুলির হাজারো নিষেধাজ্ঞার বেড়ায় সমস্যায় পড়ছে তারা। মুশকিল হচ্ছে ধার পেতে। টান পড়ছে পুঁজিতে। হোঁচট খাচ্ছে ব্যবসা। কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ।

যদিও একই সঙ্গে অমিতবাবুর দাবি, এত কিছু সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে এই ছবি কিছুটা আলাদা। তিনি জানান, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে এ রাজ্য শীর্ষে। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে এই শিল্পে গত ৭ বছরে ব্যাঙ্ক ঋণ বেড়েছে চার গুণেরও বেশি। ২০১১-১২ সালে যা ছিল ৮,৩৮৭ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৪,০৫৯ কোটি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে ঋণের পরিমাণও সাত বছরে ৫৫৩ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ৮,১৫৫ কোটি।

Advertisement

মন্ত্রী রাজ্যের ছবি আলাদা বলে দাবি করছেন ঠিকই। তবে ধার পাওয়ার সমস্যা যে এখানেও রয়েছে, ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে তা। অমিতবাবুই জানান, রাজ্যে দু’বছরে এই শিল্পের ৮০ হাজার কোটি টাকা ঋণ লাগবে। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে তা জোগাড়ের সম্ভাবনা কম। তাই এ বার সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে চাঙ্গা করে তাদের ধার দেওয়ার ক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগী হবেন তাঁরা। যাতে ছোট শিল্পের চাহিদার বড় অংশ পূরণ করতে পারে ওই সব ব্যাঙ্ক। ক’দিন আগে ঠিক যে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হাল ফেরাতে যে প্রম্পট করেকটিভ অ্যাকশন (পিসিএ) প্রকল্প চালু করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, তা-ও কার্যত কোনও সুফল দিতে পারেনি বলে এ দিন সমালোচনা করেন অমিতবাবু। বলেন, ‘‘এর আওতায় আসার পরে ত অনুৎপাদক সম্পদ ১ শতাংশের বেশি বেড়ে হয়েছে ২২%। ইঙ্গিত, অর্থবর্ষ শেষে তা আরও বাড়তে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন