প্রতীকী ছবি।
বাংলাদেশে পাটের বীজের যা চাহিদা, তার অর্ধেকের বেশি রফতানি হয় ভারত থেকে। কিন্তু মান ও রঙের দিক থেকে বাংলাদেশের পাট ক্রমশ পিছনে ফেলে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ এ দেশের অন্যান্য পাট উৎপাদক রাজ্যগুলিকে। পরিস্থিতি এমনই যে, ভাল মানের পাট ভারতকে আমদানিও করতে হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। শিল্প মহল সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য পাট উৎপাদক রাজ্যগুলির পাটের মান বৃদ্ধিতে বস্ত্র মন্ত্রক তাই চাষিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কোমর বেঁধে নামছে। দ্রুত বাস্তবায়িত করতে চাইছে একগুচ্ছ বিশেষ নীতি ও পরিকল্পনা। এ ব্যাপারে প্রযুক্তিগত কিছু কৌশল নেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ভারত ছ’লক্ষ বেল পাট আমদানি করেছিল বলে সূত্রের খবর।
ভারতে প্রতি বছর পাটের বীজ লাগে ৬,০০০ টনের মতো। বাংলাদেশে লাগে ৪,০০০ টন। সাধারণত অগস্ট-সেপ্টেম্বরে পাটের বীজ বোনা শুরু হয়। ওই সময়ে এ রাজ্যের মতো বাংলাদেশেও বর্ষা চলে গিয়ে বৃষ্টি প্রায় হয় না। কিন্তু এ দেশে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে ওই সময় বৃষ্টি হওয়ায় পাটের বীজ বোনা হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ওই রাজ্যগুলিই ভারত ও বাংলাদেশের চাষিদের চাহিদা মেটায়। জাতীয় পাট পর্ষদের কর্তাদের একাংশের দাবি, বাংলাদেশের চাহিদার ৭০% বীজই যায় ভারত থেকে। সে দেশে পাট উৎপাদন হয় ৫০ লক্ষ বেলের মতো। কিন্তু পাটের মান ভারতের থেকে বহু ক্ষেত্রেই ভাল হয়। বস্ত্র মন্ত্রক মনে করছে, এ দেশেও গুরুত্বপূর্ণ পাট উৎপাদক জেলাগুলিতে মানোন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বস্ত্র মন্ত্রকের সঙ্গে কৃষি মন্ত্রকের এ বিষয়ে বৈঠকও হয়েছে।
সাধারণত এ দেশের চাষিরা পাট গাছ পচানোর সময়ে তা পচে যাওয়া কালো অল্প জলে ডুবিয়ে রাখেন। গাছের উপরে খারাপ মাটি, কলা গাছ-সহ বিভিন্ন ভারী জিনিস চাপা দেন। ফলে গাছ পচার পরে সেখান থেকে যখন পাট বার করা হয়, তখন তার মান ও রঙ বিশেষ ভাল হয় না। পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশে ৮০ লক্ষ বেলের মতো পাট উৎপাদন হয়। কিন্তু প্রক্রিয়াগত কারণে তার মধ্যে ভাল মানের পাটের পরিমাণ থাকে খুবই কম। জাতীয় পাট পর্ষদ সূত্রের খবর, প্রথাগত চাষ এবং উৎপাদন পদ্ধতির পরিবর্তন এনে এ বার পাটের মান বাড়াতে মরিয়া কেন্দ্র।