নজির ভেঙে সেজ-এর আওতা বাড়াল কেন্দ্র

ডিজিটাল নজরদারিতে উইপ্রো দু’টি জমিকে মেলাচ্ছে সল্টলেকে

এই প্রথম শিল্পের স্বার্থে যান্ত্রিক নজরদারির মাধ্যমে দু’টি পৃথক জমিকে যুক্ত করে একটি জমি হিসেবে মেনে নিল কেন্দ্র। এবং ওই জমিকে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল বা সেজ-এর আওতায় আনার অনুমোদন দিল তারা। কেন্দ্রীয় সরকারের সেজ সংক্রান্ত পরিচালন পর্ষদ বা বোর্ড অব অ্যাপ্রুভালস এই অনুমতি দিয়েছে।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:৩৮
Share:

এই প্রথম শিল্পের স্বার্থে যান্ত্রিক নজরদারির মাধ্যমে দু’টি পৃথক জমিকে যুক্ত করে একটি জমি হিসেবে মেনে নিল কেন্দ্র। এবং ওই জমিকে বিশেষ আর্থিক অঞ্চল বা সেজ-এর আওতায় আনার অনুমোদন দিল তারা। কেন্দ্রীয় সরকারের সেজ সংক্রান্ত পরিচালন পর্ষদ বা বোর্ড অব অ্যাপ্রুভালস এই অনুমতি দিয়েছে।

Advertisement

গত অক্টোবর মাসে পর্ষদের কাছে দু’টি পৃথক জমি ডিজিটাল নজরদারির মাধ্যমে সংযুক্তির আবেদন জানায় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রো। সল্টলেকে সেক্টর ফাইভে সংস্থার বর্তমান ক্যাম্পাসের সেজ তকমা রয়েছে। প্রসঙ্গত দেশে এটাই প্রথম তথ্যপ্রযুক্তির বিশেষ আর্থিক অঞ্চল। এই ক্যাম্পাসের কাছেই রয়েছে আড়াই একর জমি। এই জমির সেজ তকমা পেতেই সংস্থা ‘ডিজিটাল’ নজরদারির হাত ধরল। তার কারণ ওই আড়াই একর বর্তমান ক্যাম্পাসের লাগোয়া নয়। ফলে সেখানে পরিকাঠামো তৈরি করে তা সেজ তকমার আওতায় আনা আইনে আটকাচ্ছিল। কারণ আইন অনুযায়ী সেজ তকমা পেতে একলপ্তে জমি থাকা বাধ্যতামূলক। উইপ্রো দাবি করেছে, দু’টি জমি পাশাপাশি না-হলেও ডিজিটাল বা যান্ত্রিক নজরদারির দৌলতে একটি ক্যাম্পাস হিসেবেই পরিচালিত হবে।

সেজ আইনের ওই শর্ত পূরণ করতে উইপ্রো ডিজিটাল নজরদারির মাধ্যমে দু’টি জমিকে যুক্ত করার আর্জি জানায়। এ ধরনের আর্জির আগে কোনও নজির নেই বলে মনে করলেও অবশেষে সায় দিয়েছে কেন্দ্র, যার জেরে দেশের প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে যান্ত্রিক নজরদারির মাধ্যমে জুড়ে গেল দু’টি পৃথক জমি।

Advertisement

বিশেষ আর্থিক অঞ্চল নিয়ে রাজ্য সরকারের তীব্র বিরোধিতায় আটকে রয়েছে রাজারহাটে ৫০ একর জমি জুড়ে উইপ্রোর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের পরিকল্পনা। স্থানাভাবে জেরবার ৭৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যবসা করা উইপ্রো সল্টলেক সেক্টর ফাইভের বর্তমান ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত তাই বাধ্য হয়েই নিয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে গত জুলাই মাসেই রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে তারা। সরাসরি স্থানাভাবের কথাও জানিয়েছে তারা। তাতে অবশ্য রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোল ঘটেনি।

সংস্থা সূত্রের খবর, নতুন ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা আপাতত হিমঘরে ঠেলা ছাড়া যে আর কোনও উপায় নেই, তা এক রকম মেনেই নিয়েছে সংস্থা। কেন্দ্রের কাছে পাঠানো আবেদনেও সংস্থা জানিয়েছে, বর্তমান ক্যাম্পাসের ১৮ লক্ষ বর্গ ফুটের বেশি এলাকায় আর জায়গা অবশিষ্ট নেই। নতুন কর্মী নেওয়ার সুযোগও নেই। সেই কারণেই ওই আড়াই একর জমিতে নয়া পরিকাঠামো গড়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চায় সংস্থা।

সেজ বিতর্কে গত পাঁচ বছর ধরেই থমকে ৫০ একর জমি জুড়ে উইপ্রোর প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। যে-সমস্যার জেরে আটকে ইনফোসিস প্রকল্পও। ইনফোসিসের মতো রাজ্য সরকারের সেজ বিরোধিতা নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেনি উইপ্রো। কিন্তু ইনফোসিসের মতোই উইপ্রোও বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের তকমা চায়। কারণ সেজের জন্য বরাদ্দ আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা ছাড়া প্রতিযোগিতার বাজারে কাজ করতে রাজি নয় তারা। ফলে বর্তমান সেজকেই যথাসম্ভব বাড়িয়ে নিয়ে কাজ চালাতে চায় তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন