খাদ্যশস্যের মোড়ক হিসেবে চটের বস্তার ব্যবহার ১০০% করতে চলেছে কেন্দ্র। মঙ্গলবার কলকাতায় এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বস্ত্র সচিব রেশমী বর্মা। বর্তমান আইন অনুযায়ী তা ৯০%।
এ দিন কলকাতায় কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি চটকল মালিক, কর্মী ইউনিয়নের প্রতিনিধি-সহ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন। উদ্দেশ্য, শিল্পের সমস্যাগুলি জানা এবং সেগুলির প্রতিকার করা।
ওই বৈঠকেই তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সভাপতি এবং সংসদের বস্ত্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি (কলসালটেটিভ কমিটি অন টেক্সটাইলস)-র সদস্য দোলা সেন দাবি করেন, রাজ্যের পাট শিল্পকে বাঁচাতে শস্য বহনে চটের বস্তার বাধ্যতামূলক ব্যবহার বাড়ানো হোক। তার উত্তরেই বর্মা এ কথা ঘোষণা করেছেন বলে জানান দোলা সেন। তিনি বলেন, ‘‘চিনি প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রেও চটের বস্তার ব্যবহার ২০% থেকে বাড়িয়ে ৪০% করার দাবি তুলেছি।’’
রাজ্যে পাট শিল্পের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর কাছে তিনি একগুচ্ছ সুপারিশ পেশ করেন বলে দাবি দোলাদেবীর। তিনি বলেন, ‘‘পাট শিল্পকে সরকারি ভাবে শিল্পের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করেছি। এ ছাড়া চাষির কাছ থেকে পাট কেনার জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণের নীতি চালু করার কথাও আমরা বলেছি।’’
কেন্দ্রীয় সহায়তা পেলে রাজ্যের পাট শিল্পের উন্নতি করার ভাল সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন দোলাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে কয়েকটি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ জরুরি। যেমন, পাটজাত পণ্য রফতানির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যাতে একটি নীতি নির্ধারণ করে, সেই দাবিও আজকের বৈঠকে করেছি।’’
পাট শিল্পের উন্নতির জন্য রাজ্য ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ধান এবং আলুর মোড়কের ক্ষেত্রে চটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। ধানে চটের বস্তার ব্যবহার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে দাবি করে দোলাদেবী বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই আলুর জন্যও এটা চালু হবে। এ ব্যাপারে পুরো পরিকল্পনা কার্যকর হলে বছরে ১ লক্ষ গাঁট অতিরিক্ত বস্তা উৎপাদন করার সুযোগ তৈরি হবে।’’
পাশাপাশি, এনটিসির দু’টি বন্ধ মিল খোলা এবং ন্যাশনাল জুট ম্যানুফ্যাকচারার্স কর্পোরেশন (এন জে এম সি)-কে চাঙ্গা করার দাবি জানিয়ে এ দিন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি তাঁরা পেশ করেছেন বলে জানান এনটিসি-র তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ মজুমদার।