শ্রম আইন ঢেলে সাজছে কেন্দ্র

শ্রম আইন সরল করার দিকে পা ফেলছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। অর্থনীতির উন্নতির জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই যার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছে এ দেশের প্রশাসন ও শিল্প। কিন্তু ইউনিয়নগুলির প্রবল প্রতিক্রিয়া ও গোঁড়া রাজনীতিকদের তরফে তীব্র বাধা আসার আশঙ্কায় এর আগে দিল্লির মসনদে বসা কোনও সরকারই এ বিষয়ে এগোতে পারেনি। এ বার সেই জগদ্দল পাথর সরিয়ে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানো, উৎপাদন শিল্পকে চাঙ্গা করা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই এই প্রথম বহু দশকের পুরনো ওই আইন ঢেলে সাজার কাজে হাত দিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০২:৫৯
Share:

শ্রম আইন সরল করার দিকে পা ফেলছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। অর্থনীতির উন্নতির জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই যার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছে এ দেশের প্রশাসন ও শিল্প। কিন্তু ইউনিয়নগুলির প্রবল প্রতিক্রিয়া ও গোঁড়া রাজনীতিকদের তরফে তীব্র বাধা আসার আশঙ্কায় এর আগে দিল্লির মসনদে বসা কোনও সরকারই এ বিষয়ে এগোতে পারেনি। এ বার সেই জগদ্দল পাথর সরিয়ে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানো, উৎপাদন শিল্পকে চাঙ্গা করা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই এই প্রথম বহু দশকের পুরনো ওই আইন ঢেলে সাজার কাজে হাত দিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

এই প্রক্রিয়ায় জড়িত শ্রম মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের দাবি, শ্রম আইন ঢেলে সাজার মাধ্যমে কাজের এমন পরিবেশ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে, যেখানে স্বার্থরক্ষা হবে কর্মী ও শিল্প, উভয় পক্ষেরই। সরকার গড়ার পরে তাদের প্রথম ১০০ দিনের কাজের মধ্যে যা অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষে। আর এ ক্ষেত্রে সব থেকে সুবিধা করে দিয়েছে গত ৩০ বছরের মধ্যে প্রথম বার সংসদে বিজেপির একক দল হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা।

বস্তুত, এ দেশের বর্তমান শ্রম আইনটি ব্রিটিশ শাসন অবসানের ঠিক পরেই তৈরি। বিশ্বব্যাঙ্কের ২০১৪-র এক রিপোর্ট জানিয়েছে, যদিও শ্রমিক কল্যাণই এর মূল লক্ষ্য হওয়ার কথা, কিন্তু এখানে আদপে আইনটি তা করে না। এমনকী ভারতের শ্রম বাজারে কড়াকড়িও অত্যন্ত বেশি। চলতি বছরে উপদেষ্টা সংস্থা ম্যাকিনসের সমীক্ষাতেও প্রকাশ, ভারতের শ্রম আইন মান্ধাতার আমলের ও বেশ জটিল। যে কারণে এ দেশের বেশির ভাগ উৎপাদন সংস্থাই আইন বাঁচিয়ে চলার উপায় হিসেবে অল্প কর্মী নিয়ে ছোট আকারে থাকতেই বেশি পছন্দ করে। ফলে শ্রমিকদের ভাল তো হয়ই না, এমনকী অনেক সময়ে ভুগতে হয় শিল্পকেও।

Advertisement

শিল্পমহলের আশা, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিছুটা অন্তত উদার হবেন। তাদের ধারণা, যে-আইনে এখন প্রয়োজনেও শ্রমিক ছাঁটাই প্রায় অসম্ভব, তা এ বার বদলাতে পারে। সরকারি আধিকারিকদের অবশ্য দাবি, বদল আনা হচ্ছে শ্রমিকদের ভালর জন্যই। যার মধ্যে থাকছে, জাতীয় স্তরে ন্যূনতম মজুরির হার বেঁধে দেওয়া, আরও বেশি শ্রমিককে ওই মজুরি পাওয়ার যোগ্য করা, ওভারটাইমের সময় বাড়ানো, মহিলাদের রাতের শিফ্টে কাজ করার অনুমতি দেওয়া, ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট সময় অন্তর বেতন সংশোধন ইত্যাদি।

তবে সংস্কারের পরের স্তরে আসবে ছাঁটাই নিয়ে কড়াকড়ি শিথিল করার মতো সব থেকে স্পর্শকাতর বিষয়টি। সরকারি সূত্রে দাবি, এ বিষয়ে ধাপে ধাপে কিছু পরিবর্তন আনার জন্য কেন্দ্র ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন