Inflation

মূল্যবৃদ্ধির থেকেও কম সুদ জমায়, বাড়ছে চিন্তা 

অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হলেও, শেয়ার বাজারের অবশ্য তাতে হেলদোল নেই।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০২:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

আমজনতার জন্য খারাপ খবর। জুনে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬.০৯%। যা দেশের প্রথম সারির ব্যাঙ্কগুলি এখন জমার উপরে যতটা সুদ দিচ্ছে (কমবেশি ৫.৫%), তার তুলনায় অনেকটা বেশি। অর্থাৎ, ব্যাঙ্কে টাকা রেখে কর মেটানোর পরে হাতে যে সুদ আসছে, তার প্রায় পুরোটাই চলে যাচ্ছে জিনিসের দাম মেটাতে। ঝুলি ভরছে না সঞ্চয়ের।

Advertisement

মানুষকে বিশেষত ভাবাচ্ছে খাদ্যপণ্যের দাম। যা বেড়েছে ৭.৮৭%। এর মধ্যে ডালের দাম বেড়েছে ১৬.৬৮%, মাছ-মাংসের ১৬.২২%, ভোজ্য তেল ১২.২৭% এবং মশলার ১১.৭৪%। তবে বাজারে গেলে মনে হবে, আসলে খাদ্যপণ্য সরকারি হিসেবের চেয়েও অনেকটা দামি। তার উপরে রয়েছে পেট্রল ও ডিজেলের নাগাড়ে বেড়ে চলা দর। যা ঠেলে তুলতে শুরু করেছে জিনিসের দামকে। এই পরিস্থিতিতে আমানতে সুদের হারের পতন নিয়ে চিন্তায় আমজনতা। বিশেষ করে কপালে ভাঁজ গভীর হচ্ছে করোনার ধাক্কায় কাজ হারানো বা বেতন ছাঁটাই হওয়া মানুষের। প্রবীণরা অন্যদের তুলনায় কিছুটা বেশি সুদ পাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু শুধুমাত্র তাঁদের জন্য আনা বিভিন্ন প্রকল্পেও সুদ কমেছে লকডাউনের মধ্যে। ফলে খুব একটা স্বস্তিতে নেই তাঁরাও।

অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হলেও, শেয়ার বাজারের অবশ্য তাতে হেলদোল নেই। শুক্রবার সেনসেক্স ফের ঢুকে পড়েছে ৩৭,০০০-এর ঘরে। নিফ্‌টিও ছুঁতে চাইছে ১১,০০০-এর গণ্ডি। শেয়ারের দাম বাড়ায় খুশি মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নিকারীরাও। বাজারকে এখন চাঙ্গা রাখছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়, টিসিএস, ইনফোসিসের মতো প্রথম সারির কিছু বড় মাপের (লার্জ ক্যাপ) সংস্থার শেয়ার দর। তা ছাড়া, ভাল অবস্থায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ভোগ্যপণ্য এবং ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার দামও।

Advertisement

শেয়ার বাজার ভাল জায়গায় থাকায় ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে বেশ কিছু ফান্ড। তবে এ বার থেকে এই ডিভিডেন্ড করযোগ্য হবে। সেই কারণে যাঁরা ফান্ডে লগ্নিতে ডিভিডেন্ড বিকল্প বেছেছিলেন, তাঁরা চাইলে গ্রোথ বিকল্পে সরতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে, শেয়ারে ঘোষিত ডিভিডেন্ডের উপরেও কর দিতে হবে এ বার থেকে।

শেয়ার বাজার ছাড়া গত সপ্তাহের উল্লেখ্যযোগ্য খবরগুলি ছিল—

• গত সাত দিনে আর্থিক ফল ঘোষণা করেছে বেশ কিছু সংস্থা। এপ্রিল-জুনের মধ্যে দু’মাস পুরো লকডাউন চলা সত্ত্বেও মুনাফার মুখ দেখেছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি। বিশেষত ভাল ফল করেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি (সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল ফলাফলের বিস্তারিত হিসেব)।

• কোনও রকমে উতরে গিয়েছে আর্থিক সমস্যায় পড়া ইয়েস ব্যাঙ্কের ১৫,০০০ কোটি টাকার ফলোঅন পাবলিক অফার (বাজারে ফের শেয়ার ছাড়া)। বিক্রির জন্য রাখা ১২-১৩ টাকা মূল্যবন্ধনীর শেয়ার কিনতে আবেদন জমা পড়েছে ৯৫%।

• জুনে রফতানি ১২.৪১% কমে হয়েছে ২১৯১ কোটি ডলার। আমদানি কমেছে ৪৭.৫৯%। ১৮ বছরে এই প্রথম বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হয়েছে ভারতের।

• করোনার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে আবার বৃদ্ধির পথে হাঁটতে শুরু করেছে চিন। এপ্রিল-জুনে সেখানের জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৩.২%।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন