এই মুহূর্তে জেটের মোট ২৬টি বিমান চালু। অথচ গত বছরের শেষে ১১৯টি বিমান ছিল।
জেটকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন ঋণদাতারা পরিচালনার রাশ হাতে নিলেও জল্পনা কাটছে না কিছুতেই। বুধবার সকালে বিমান মন্ত্রকের সচিব প্রদীপ খারোলা জানান, মঙ্গলবার জেট আরও ১৫টি বসিয়ে দেওয়ায় এখন ১৫টিরও কম বিমান চালু। তার পরেই সংস্থার আন্তর্জাতিক উড়ানের লাইসেন্স বাতিল হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। খারোলা নিজেও জানান, বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা জরুরি। পরে এ দিন সন্ধ্যায় তিনিই বলেন, এখন জেটের ২৮টি বিমান চালু। যার ১৫টি পরিষেবা দিচ্ছে দেশে। এতে আরও দানা বাঁধে জল্পনা। যা সংস্থার সঙ্কট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
অন্য একটি সূত্র আবার জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে জেটের মোট ২৬টি বিমান চালু। অথচ গত বছরের শেষে ১১৯টি বিমান ছিল। বাকি সব বসে গিয়েছে।
এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন ঋণদাতারা সংস্থা পুনরুজ্জীবনের জন্য ১,৫০০ কোটি টাকা ঢালার কথা বললেও, তাতে লাভ হবে তো? এ ভাবে বিমান বসে যাওয়া নিয়ে জল্পনা ছড়ালে মিলবে তো ক্রেতার খোঁজ? অনেকেই বলছেন, পরিচালনার রাশ হাত বদলের পরেও যে ভাবে প্রতি দিন সঙ্কট গভীর হচ্ছে, তাতে ক্রেতা খোঁজার সময়টুকু পাওয়া যাবে কি না, সেটাই ভাববার বিষয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিমান বৃত্তান্ত
• বুধবার সকালে বিমান সচিব প্রদীপ খারোলা বলেন, ১৫টিরও কম বিমান চালু রয়েছে জেটের।
• সন্ধ্যায় খারোলার মন্তব্য, পরিষেবা দিচ্ছে সংস্থার ২৮টি বিমান। যার মধ্যে ১৫টি শুধু দেশীয় রুটে।
• সচিব এটাও বলেন, পরীক্ষা করে দেখা জরুরি এখন আর আন্তর্জাতিক পরিষেবা দেওয়ার যোগ্য কি না জেট।
• দুপুরে বিমান নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ-র মুখপাত্র জানান, এই মুহূর্তে জেট চালাচ্ছে ২৮টি বিমান।
• মঙ্গলবার জেট জানিয়েছিল, ভাড়া বকেয়া পড়ায় আরও ১৫টি বিমান বসিয়ে দিয়েছে তারা। ফলে বসে যাওয়ার বিমানের সংখ্যা এখন ৬৯। ছিল প্রায় ১১৯টি বিমান।
জেটের দাবি
• সংস্থা উড়ানসূচিতে কাটছাঁট করলেও, যথেষ্ট সংখ্যক বিমান চালু। যথাযথ ভাবে মানা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা।
• আন্তর্জাতিক উড়ান চালানোর যোগ্যতা নিয়ে যে জল্পনা ছড়িয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে চায় তারা।
গয়ালের চিঠি
আমি ঋণদাতাদের দেওয়া প্রতিটি শর্তে সম্মতি দিয়েছি। সে জন্য তাদের প্রস্তাবিত পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনায় সইও করেছি। যাতে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়েই নগদ অর্থ পেতে সমস্যায় না পড়ে জেট।
কিন্তু প্রশ্ন
• চালু বিমানের সংখ্যা নিয়ে জল্পনা জেটের সঙ্কট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে না তো?
• আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা যদি সত্যিই বন্ধ হয়ে যায়, তখন?
• এত কাণ্ড করে পরিচালনার রাশ বদল সত্ত্বেও, সংস্থার ক্রেতার খোঁজ পাওয়া
সম্ভব হবে কি?
জেট অবশ্য বুধবারই সরকারি ভাবে জানিয়েছে, উড়ানসূচি ছেঁটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিমান নিয়েই পরিষেবা দিচ্ছে তারা। সে কথা নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ-কে জানানোও হয়েছে। যা শুনে সংস্থার কর্মী-অফিসারেরা বলছেন, ‘‘শুনলাম কিছু টাকা ঢুকেছে। তাই বকেয়া বেতনের মধ্যে ডিসেম্বরের একাংশ মেটানো হয়েছে। পাইলটেরাও কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত পিছিয়ে ১৫ এপ্রিল করেছেন। কিন্তু নতুন করে সংস্থা জানিয়েছে, বাকি বকেয়া ছাড়াও ১৬ হাজার কর্মীকে মার্চের বেতনও এখন দেওয়া যাবে না। দিন সাতেক না গেলে কিছু বোঝা যাবে না।’’
বিমানমন্ত্রী সুরেশ প্রভু অবশ্য বুধবার বলেন, ঋণদাতা ও জেটের মধ্যে যা ঠিক হওয়ার হবে। কেন্দ্র নাক গলাবে না। নরেশ গয়াল এবং এতিহাদ প্রতিনিধি পর্ষদ থেকে সরার পরে এখন যাঁরা সংস্থা চালাচ্ছেন, তাঁদের একাংশের বক্তব্য, যত দ্রুত সমস্যা মিটবে বলে আশা করা হয়েছিল, তার চেয়ে সময় বেশি লাগছে। কবে কর্মীরা বকেয়া পাবেন, তা ৯ এপ্রিল নাগাদ জানা যাবে। তবে ব্যাঙ্ক যেহেতু টাকা ঢালতে রাজি, তাই দেরিতে হলেও সমস্যা মিটবে বলে আশা তাঁদের।
বিমান লিজদাতা সংস্থার প্রতিনিধি জানান, প্রায় ৫-৬ মাসের টাকা বাকি। জেট গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, সপ্তাহান্তে এক মাসের বকেয়া মেটাবে। কিন্তু তা হয়নি।