চুপিসারে মাসুল বৃদ্ধির অভিযোগ শুভেন্দুর
Electric Bills

চড়া বিদ্যুতের বিল নিয়ে আন্দোলনে গ্রাহক সমিতি

নিয়মমাফিক সরকারি বা বেসরকারি বণ্টন সংস্থাকে বিদ্যুতের যে কোনও ধরনের চার্জ বা ফি বৃদ্ধির জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে আর্জি জানাতে হয়। কমিশন যেটায় সায় দেয়, সেই খরচ বাড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:১৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত মাস থেকে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আওতাভুক্ত এলাকায় বহু গ্রাহকের বিদ্যুতের বিল গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিক বেশি এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খাদ্য-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসের চড়া দামে এমনিতেই নাকাল সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের খরচ আচমকা অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় অনেকের মাথায় হাত পড়েছে। গ্রাহকদের সংগঠন সারা বাংলা বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির (অ্যাবেকা) অভিযোগ, রাজ্যে ‘চুপিসারে’ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যুতের বিল বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে আন্দোলনেও নেমেছে তারা। একই অভিযোগ তুলে এবং অ্যাবেকার আন্দোলনকে সমর্থন করে মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যমে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দাবি, বিদ্যুতের মাসুল এক পয়সাও বাড়েনি।

Advertisement

নিয়মমাফিক সরকারি বা বেসরকারি বণ্টন সংস্থাকে বিদ্যুতের যে কোনও ধরনের চার্জ বা ফি বৃদ্ধির জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কাছে আর্জি জানাতে হয়। কমিশন যেটায় সায় দেয়, সেই খরচ বাড়ে। সূত্রের দাবি, গত মার্চে কমিশনের অনুমোদনে রাজ্য বণ্টন সংস্থার বিদ্যুৎ সংযোগের স্থায়ী (ফিক্সড) চার্জ অল্প বেড়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহার না হলেও যে ন্যূনতম টাকা নেওয়া হত, খানিকটা বেড়েছে সেটিও। তবে সংস্থা বলছে, বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য প্রতি কিলোওয়াট আওয়ারে (কেডব্লিউএইচ) যে মাসুল নেওয়া হয়, তা দীর্ঘ দিন ধরেই স্থির। কিন্তু গ্রাহকদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছন, বাস্তবে তাদের বিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিপুল চড়েছে। যাঁদের এসি নেই, তাঁদের একাংশও টাকার অঙ্ক দেখে চিন্তায় পড়েছেন।

শুভেন্দু এ জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করে সামাজিক মাধ্যমে বলেন, ‘‘পকেটমার সরকার হইতে সাবধান! বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির প্রতিবাদ আন্দোলনে আমার পূর্ণ সমর্থন রইল। ওঁদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বৈরাচারী সরকারের অতি চালাকি ধরা পড়ে গেছে। চুপি চুপি বিভিন্ন খাতে দাম বাড়িয়ে বিদ্যুতের বিল ব্যাপক ভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে এই সরকার। সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এর একটা হেস্তনেস্ত না করলেই নয়। এই ভাবে লুকিয়ে চুরিয়ে দাম বৃদ্ধি, পকেটমারির সমান।...।’’ এ নিয়ে আগেও বিধানসভায় এবং তার বাইরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

অ্যাবেকা-র সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বিশ্বাসের দাবি, ‘ফিক্সড চার্জ’ বৃদ্ধির জন্য মূলত ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থা, ছোট ব্যবসায়ী এবং নিম্নবিত্ত গ্রাহকদের আর্থিক খরচের বোঝা প্রচুর বেড়েছে। অনেকই সংযোগ ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। রেহাই দিতে গ্রাহক মহলে ‘স্ল্যাব’ (বিদ্যুতের ব্যবহার অনুযায়ী বিভিন্ন ধাপ)-এর চালু কাঠামো বদলের আর্জিও উঠছে। যদিও তাঁর মতে, স্ল্যাবের হার ঠিক আছে।

বণ্টন সংস্থার সূত্রের দাবি ছিল, এ বারের প্রখর গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধিই মূলত গৃহস্থ গ্রাহকদের বিলের অঙ্ক বৃদ্ধির কারণ। কিন্তু গ্রাহকদের প্রশ্ন, শুধু তাতেই বেশ কয়েক হাজার টাকা বৃদ্ধি অবাস্তব নয় কি? বিশেষ করে যে সব গ্রাহকদের বাড়িতে এসি বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র তেমন চলে না, তাঁদের। সুব্রতবাবুর বক্তব্য, রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ অনেক কম এবং মূলত রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদনই চাহিদার সিংহভাগ জোগায়। উল্টে মাসুল কমানোর সওয়াল করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন