RBI

ভারতের অর্থনীতি মজবুত জানিয়েও বৃদ্ধি নিয়ে সংশয়

আরবিআই গভর্নরের আপাত স্বস্তির এই বাণীতে হাসি ফুটেছে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মুখে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ০২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্ব অর্থনীতির একটা বড় অংশে মন্দা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে বলে জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। তবে একই সঙ্গে শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি, ভারতীয় অর্থনীতির ভিত শক্ত। এমনকি ২০০৮ সালের বিশ্ব জোড়া মন্দার পরবর্তী সময়ের চেয়েও এখন তা বেশি মজবুত। গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের যুক্তি, করোনা অর্থনীতিকে ধাক্কা দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কেটে যাবে।

Advertisement

আরবিআই গভর্নরের আপাত স্বস্তির এই বাণীতে হাসি ফুটেছে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মুখে। শক্তিকান্তের বক্তব্যকে তিনি স্বাগতও জানিয়েছেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাই মনে করাচ্ছেন, অর্থনীতির ভিত মজুবত বলে জানালেও করোনার জেরে কোথায় কোথায় বিপদ ঘনাচ্ছে, তা-ও স্পষ্ট বলেছে আরবিআই। যা নিয়ে আজ অর্থ মন্ত্রকের অন্দরেও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। কারণ, শীর্ষ ব্যাঙ্কের মতে, পরিসংখ্যান দফতর চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধি ৫% হবে বলে পূর্বাভাস দিলেও, করোনার ফলে অর্থনীতি ধাক্কা খাওয়ায় আরও কমবে তা। বাণিজ্য, পর্যটন, বিমান, হোটেল, নির্মাণ ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত। কৃষি ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রেই সেই লক্ষণ স্পষ্ট। কোথায় তার প্রভাব কতটা, সেটা নির্ভর করছে করোনার জের কতদিন থাকবে এবং তা কতখানি ছড়াবে তার উপরে।

তার উপরে আজ দেড় মাসে তৃতীয়বার পূর্বাভাস ছাঁটাই করে মুডি'জ় বলেছে, ২০২০ সালে ভারতের বৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশে নামবে। আর এক রেটিং সংস্থা ইক্রার হিসেব, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বৃদ্ধি তলিয়ে যাবে ২ শতাংশে। এই পরিস্থিতিতে রাজকোষ ঘাটতির কথা মাথায় না-রেখে সঙ্কট মোকাবিলা করা উচিত বলে মত অর্থনীতিবিদ এম গোবিন্দ রাওয়ের। তাঁর যুক্তি, অর্থ মন্ত্রকের উচিত রাজ্যের ঘাটতি ০.৫% বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া। যাতে তারা আরও অর্থ ঢালতে পারে।

Advertisement

শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি

• দেশে রাজকোষ ঘাটতি, বিদেশি মুদ্রা লেনদেন ঘাটতি আগের থেকে কম।

• মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে।

• কারখানা ও বিদ্যুৎ উৎপাদন মুখ তুলেছিল জানুয়ারিতে।

• ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার তুলনায় এখন পরিস্থিতি ভাল।

অথচ ইঙ্গিত

• করোনার ধাক্কায় অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে চলতি অর্থবর্ষে ৫% বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছোঁয়া নিয়ে সংশয় থাকছেই।

• ব্যবসা মার খাচ্ছে হোটেল, বিমান, পর্যটন, নির্মাণের মতো ক্ষেত্রে।

• কৃষি ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রেই সঙ্কটের লক্ষণ স্পষ্ট। করোনা জের কতটা পড়ছে তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।

• ২০২০ সালে ভারতের বৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশে নামবে, পূর্বাভাস মূল্যায়ন সংস্থা মুডি'জ়ের। ১৭ মার্চ তা ৫.৩% হবে বলে জানিয়েছিল তারা।

• ইক্রার মতে, পরের অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে মাত্র ২%।

এ দিকে, শেয়ার বাজার মার্চেই পড়েছে প্রায় ১০,০০০ পয়েন্ট। ডলারের নিরিখে টাকা তলানিতে। এক ডলার বেড়ে ছুঁয়েছে ৭৬ টাকা। তবে তা সত্ত্বেও শক্তিকান্তের দাবি, অর্থনীতি ভাল জায়গাতেই আছে। যুক্তি, রাজকোষ ঘাটতি, বিদেশি মুদ্রার লেনদেন ঘাটতি আগের থেকে অনেক কম। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। শেয়ার দরে পতনের ফলে আর্থিক অস্থিরতা কম। বেশ কম টাকার দামে দৈনিক গড় পরিবর্তনও। তবে তারা মনে করাচ্ছে, কৃষি ছাড়া আর কোথাও আশার আলো নেই। জানুয়ারিতে কারখানা উৎপাদন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সামান্য উন্নতি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু করোনার ধাক্কায় তা ধুয়েমুছে যাবে কি না, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন