দেশ জুড়ে প্রবল চাপের মুখে সরকার বৃহস্পতিবারই জানিয়েছে ৮৬% এটিএমই এখন স্বাভাবিক। সমস্যা যেটুকু আছে, তা-ও নাকি মিটে যাবে দিন দুয়েকের মধ্যে। অথচ দিনরাত এক করে বাড়তি নোট ছাপার ফরমান এসেছে শালবনি টাঁকশালে। কাজের সময় বাড়ছে। শনিবারের ছুটিও বাতিল। একই ভাবে নাগাড়ে নোট ছাপার কথা নাশিক -সহ চার সরকারি টাঁকশালেও বলেছে কেন্দ্র। প্রশ্ন উঠছে, নগদের জোগান স্বাভাবিক হলে, এই সাজ-সাজ রব কেন? পাঁচশোর জোগান বাড়াতে?
বাড়তি নোট ছাপতে সেই নোটবন্দির সময়ের ব্যস্ততা যেন ফিরছে শালবনি টাঁকশালে। এক সূত্রে খবর, শুক্রবার টাঁকশালের কর্মী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে কর্তৃপক্ষের। তাঁরা কাজের সময় বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন। নোট বাতিলের সময়েও এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। শালবনি টাঁকশালের কর্মী সংগঠনের সহ-সভাপতি নেপাল সিংহ বলছেন, ‘‘কাজের সময় বাড়ছে। এ দিন কর্মীরা বিষয়টি জেনেছেন।’’ তবে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেননি কর্মীরা। বরং সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
শালবনি টাঁকশালে তিন শিফ্টে কাজ হয়। দিনে আট ঘন্টা করে কাজ করতে হয়। এ বার বারো ঘন্টা করে ডিউটি করতে হবে। আগামী সোমবার থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার কথা। পাশাপাশি, কোপ পড়ছে ছুটিতেও। সাধারণত, মাসে দু’টি শনিবার এবং সব রবিবার ছুটি থাকে। রবিবারের ছুটি থাকলেও শনিবারের ছুটি আপাতত থাকছে না। তিন মাস এই ব্যবস্থা বহাল থাকার কথা। নোটবন্দির সময়ে যেমন হয়েছিল।
ফরমান
• বাড়তি নোট ছাপার নির্দেশ শালবনি টাঁকশালে
• চলার কথা আগামী তিন মাস
• দিনে ৮ ঘণ্টার শিফ্ট বেড়ে ১২ ঘণ্টা
• রবিবার ছাড়াও, এমনিতে মাসে দু’টি শনিবার ছুটি। কিন্তু আপাতত কোপ সেই দুই ছুটিতে
• একই ভাবে জোরকদমে বাড়তি নোট ছাপার নির্দেশ আগেই গিয়েছে নাশিক টাঁকশালে
• চার সরকারি টাঁকশালেই নোট ছাপা চলছে যুদ্ধকালীন মেজাজে
জল্পনা
• ৮৬% এটিএম স্বাভাবিক হওয়ার কথা বৃহস্পতিবারই বলেছে কেন্দ্র। তবে এত নোট ছাপানো কেন?
• নতুন করে ২,০০০ টাকার নোট আর না ছাপিয়ে সম্প্রতি ৫০০ টাকার জোগান ৫ গুণ করার কথা বলেছে কেন্দ্র। তৎপরতা কি সেই কারণেই?
এখন দেশের নানা প্রান্তেই এটিএমে নোটের আকাল। সব দিক দেখে নোটের জোগান স্বাভাবিক করতে বাড়তি সময় কাজের নির্দেশ বলে মনে করছেন শালবনি টাঁকশালের কর্মীরা। এখন টাঁকশালে দিনে ৩-৩.৫ কোটি নোট ছাপা হয়। সূত্রের দাবি, কাজের সময় বাড়লে দেড় গুণ বেশি নোট ছাপা যাবে।
নতুন করে ২,০০০ টাকার নোট আর না ছেপে পাঁচশোর নোট পাঁচ গুণ ছাপাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। অনেকের প্রশ্ন, এই যুদ্ধকালীন তৎপরতা কি সেই কারণেই?