‘খোঁজ চলছে দীর্ঘ মেয়াদি সমাধানের’। পেট্রল ৮১ টাকা ছাড়ানোর দিনেও ফের এই শুক্নো আশ্বাসেই আটকে থাকলেন তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। যা দেখে অনেকে বলছেন, আসলে কিছুটা সময় কিনছে কেন্দ্র। অপেক্ষা করছে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমার। রাশিয়া ও ওপেক দেশগুলির উৎপাদন বাড়ানোর ভাবনা আর আমেরিকা থেকে আসা অশোধিত তেলের দৌলতে যার সম্ভাবনা যথেষ্ট বলে মনে করছেন তাঁরা।
কর্নাটক ভোটের পরেই দেশে জ্বালানির দর বাড়ছে নাগাড়ে। আমজনতা ক্ষুব্ধ। বিঁধছেন বিরোধীরা। এই অবস্থায় সোমবারও প্রধান বলেন, দাম বেড়েছে অশোধিত তেলের দর এবং ডলারের দাম মাথাচাড়া দেওয়ার কারণে। কিন্তু দর কমানোর দাওয়াই তিনি বলেননি। তাই অনেকে বলছেন, বিশ্ব বাজারে তেলের দর কমার দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে কেন্দ্র।
সেই সঙ্গে হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়েছে পেট্রোপণ্যকে জিএসটির আওতায় আনার তত্ত্ব। এ কথা জেনেই যে, চট করে সেই বদল মুখের কথা নয়। শোনা গিয়েছে ওএনজিসি-র উপরে কর বসানোর কথাও। কিন্তু এখন বিশ্ব বাজারে দর কমাকেই সবচেয়ে কাছের গ্রহ বলে মনে হচ্ছে তাঁদের।
রুপোলি রেখা
• জুন থেকেই রেকর্ড অশোধিত তেল এশিয়ায় রফতানি করতে চলেছে আমেরিকা।
• দিনে ২৩ লক্ষ ব্যারেল রফতানির মধ্যে ১৩ লক্ষই আসার কথা এই মহাদেশে।
• পশ্চিম এশিয়ার তেল কেনা কমিয়ে আরও বেশি করে এই তেল কিনছে চিন। দরে সস্তা হলে আগ্রহী ভারতও।
• বাজার খোয়ানোর আশঙ্কায় দ্রুত উৎপাদন বাড়াচ্ছে রাশিয়া। একই পথে হাঁটার কথা ভাবতে হচ্ছে সৌদি আরবকেও।
• আগাম লেনদেনের আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দর কমছে। তা আরও নামার আশা।
কেন্দ্রের কৌশল
• সরকার সমাধান খুঁজছে বললেও বিশদে জানাননি তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। আটকে সেই শুক্নো আশ্বাসেই।
• আরও তিন-চার দিন অপেক্ষা করতে চায় কেন্দ্র। আশা, বিশ্ব বাজারে তেলের দর কমার।
• মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যকে কর কমাতে বলতে পারে কেন্দ্র।
• পেট্রল, ডিজেলের আগাম লেনদেনে শর্তসাপেক্ষে সায়।
তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক ও রাশিয়া বলেছে, তেলের উৎপাদন বাড়ানোর কথা ভাবছে তারা। তার উপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ জানিয়েছে, আগামী মাস থেকেই বিপুল পরিমাণ অশোধিত তেল এশিয়ায় পাঠাবে তারা। যা ঠেকাতে আরও বেশি করে উৎপাদন বৃদ্ধির কথা ভাবতে হচ্ছে রাশিয়া ও ওপেক দেশগুলিকে। আর এই যুদ্ধই এখন অক্সিজেন কেন্দ্রের।