উজ্জ্বল বিন্দুতে আশঙ্কার ছবি  

ভোটের দামামা বেজে যাওয়ায় এখন অর্থনীতি সামলানোয় তাঁর সরকারের সাফল্যের কথা প্রায় নিয়ম করে প্রতি দিন বলছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০৩:২৩
Share:

শেষ মুহূর্তের গোলে মান বাঁচিয়ে বিশ্বকাপে টিকে গিয়েছে মেসির আর্জেন্টিনা। কিন্তু ভোটের বছরে যাবতীয় ঝড়ঝাপ্টা সামলে মোদীর ভারতের অর্থনীতিও সামনে দৌড়তে পারবে কি?

Advertisement

ভোটের দামামা বেজে যাওয়ায় এখন অর্থনীতি সামলানোয় তাঁর সরকারের সাফল্যের কথা প্রায় নিয়ম করে প্রতি দিন বলছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে শিল্পমহলের সামনেও সেই একই কথা বলে এসেছেন তিনি। কিন্তু বুধবার ঝুলি থেকে বেড়াল বেরোলো সরকারের ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকেই। সেখানে উপস্থিত অর্থনীতিবিদরা তুলে ধরলেন অনিশ্চয়তার ছবি। তাঁদের মতে, মূল্যবৃদ্ধি, সুদ, রাজকোষ ঘাটতি এবং বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি— চার ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি গত বছরের তুলনায় বেশ খারাপ। তাঁদের সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তা ডলারের তুলনায় টাকার দামের পতন নিয়ে। যে ডলার বুধবার আরও বেড়ে হয়েছে ৬৮.৬১ টাকা। টাকার দাম গত ১৯ মাসে এতটা নামেনি।

মুম্বইয়ে মোদী যখন অর্থনীতির সাফল্য প্রচারে ব্যস্ত, তখনই দিল্লিতে নীতি আয়োগ অর্থনীতিবিদদের বৈঠক ডেকেছিল। উপস্থিত ছিলেন, আইআইএম বেঙ্গালুরুর অধ্যাপক চরণ সিংহ, আইআরডিএ-র সুভাষ চন্দ্র কুন্তিয়া, অজিত রানাডে প্রমুখ। বিষয় ছিল, দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি। সেখানেই অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তাঁরা।

Advertisement

মোদী মুম্বইয়ে দাবি করেছিলেন, অর্থনীতির ছবি এখন এতটাই ঝকঝকে যে, ভারতই বিশ্ব অর্থনীতির ইঞ্জিন। বৃদ্ধির হারে উজ্জ্বল বিন্দু। তাঁর যুক্তি, মূল্যবৃদ্ধির হার এখন নিয়ন্ত্রণে। বিশ্ব বাজারে তেলের দর বাড়লেও মূল্যবৃদ্ধি বা রাজকোষ ঘাটতি মাত্রাছাড়া হওয়ার আশঙ্কা নেই।

কিন্তু আয়োগের বৈঠকে উপস্থিত এক অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘‘এমনিতেই অশোধিত তেলের দাম বাড়ছে। তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ও বাণিজ্য যুদ্ধের ঠেলায় ডলারের দর আরও বাড়বে। ফলে তেল আমদানির খরচও বাড়বে ভারতের। লাগামছাড়া হতে পারে বিদেশি মুদ্রার ঘাটতি। চড়তে পারে মূল্যবৃদ্ধিও।’’

আর এক অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রের রাজকোষ ঘাটতিকে মাত্রাছাড়া হতে দেবেন না বলছেন। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মিলিত ঘাটতি উদ্বেগজনক। মোদী বিপুল বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারের কথা বললেও অর্থনীতিবিদরা মনে করিয়েছেন, ১৫ জুনের হিসেবেই তা ৩০০ কোটি ডলার কমেছে। আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনাদায়ী ঋণ নিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন