এক লাফে ১৬ ধাপ। অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতার সুযোগ কতটা, তার সূচকে ভারত এ বছর উঠে এসেছে ৩৯তম স্থানে। তবে সাফল্য সত্ত্বেও বিঁধে রয়েছে দুশ্চিন্তার কাঁটা। কারণ, এ দেশে ব্যাঙ্কের খাতায় এখনও বিপুল অনাদায়ী ঋণের বোঝা, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে রয়েছে খামতি আর পরিকাঠামো অনেক সময়েই নড়বড়ে। যার জেরে প্রতিযোগিতার মাপকাঠিতে প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে রয়েছে ভারত।
কোনও দেশে তার নাগরিকদের শ্রীবৃদ্ধির সুযোগ, নিজের সম্পদকে ভাল ভাবে ব্যবহারের ক্ষমতা, আর্থিক সংস্কার, সরকারি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা— এই সব বিচার করে প্রতি বছর জেনিভা-র ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম একটি গ্লোবাল কম্পিটিটিভ ইনডেক্স বা প্রতিযোগিতার সূচক তৈরি করে। এ বার সেই সূচকে ভারত এক লাফে ১৬ ধাপ এগিয়ে ১৩৮টি দেশের মধ্যে ৩৯ তম স্থানে উঠে এসেছে। গত বছরও ভারত ১৬ ধাপ এগিয়ে ৫৫ তম স্থানে উঠে এসেছিল। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দাবি, আগামী বছর জিএসটি চালু হলে
ভারত আরও উপরের সারিতে জায়গা করে নেবে।
সামনেই উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে ভোট। তার উপর ‘অচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ন দেখানো নরেন্দ্র মোদীর উপর অর্থনীতির ক্ষেত্রে কিছু করে দেখানোর চাপ তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু ভারতের বৃদ্ধির হার গোটা বিশ্বে সবথেকে বেশি— এই তথ্য ছাড়া সাধারণ মানুষকে বোঝানোর মতো আর কোনও পরিসংখ্যান সরকারের হাতে ছিল না। এই পরিস্থিতিতে পরপর দু’বছরের এই ‘সাফল্য’ নিয়ে আজ থেকেই মাঠে নেমে পড়েছে সরকার। জেটলি সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারের হয়ে এর কৃতিত্ব দাবি করেছেন। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ টানা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে খোলামেলা নীতি, আর্থিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনায় মোদী সরকারের প্রচেষ্টা এই সূচকে প্রতিফলিত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু রাজকোষ ঘাটতি কমানোর জন্য মোদী সরকার যে-বাহবা পেয়েছে, তার অনেকখানি কারণ হল বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমে যাওয়া।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি অনেক দিন ধরেই অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা নিয়ে চিন্তিত।