ইপিএফের খুঁটিনাটি

কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফ কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ আইন অনুযায়ী তৈরি একটি সঞ্চয় প্রকল্প। চালু হয়েছিল চাকরিজীবীদের সামাজিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ১১:০৫
Share:

কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড কী?

Advertisement

কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফ কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ আইন অনুযায়ী তৈরি একটি সঞ্চয় প্রকল্প। চালু হয়েছিল চাকরিজীবীদের সামাজিক সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে। ইপিএফ চালু মূলত বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায়। যে-সব কর্মী এর আওতায় পড়েন, তাঁদের বলা হয় পিএফ সদস্য। পিএফের একটা অংশ মূল তহবিলে জমে। আর একটা অংশ বাড়তে থাকে পিএফের পেনশন হিসেবে। মূল পিএফ তহবিলে জমা টাকাই চাকরি জীবন শেষ হওয়ার পরে হাতে পান কর্মীরা। যা ব্যাঙ্কে বা অন্য কোথাও লগ্নি করে অবসরজীবনের আর্থিক সংস্থানের বন্দোবস্ত করা যায়। তবে বিশেষ কিছু প্রয়োজনে অবসরের আগেও পিএফ তহবিল থেকে অগ্রিম তোলার সুবিধা রয়েছে।

কারা এর আওতায় পড়েন?

Advertisement

সংবাদমাধ্যম ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রেই যে-কর্মীদের মাসিক মূল বেতন ও মহার্ঘ ভাতা ১৫,০০০ টাকা বা তার নীচে, তাঁরাই শুধু পিএফের আওতায় পড়েন। কেউ যদি চাকরির শুরু থেকেই ১৫,০০০ টাকার বেশি বেতন পান, সে ক্ষেত্রে তিনি পিএফের আওতায় আসবেন না। আবার এটা হতে পারে যে, কেউ কম বেতনে চাকরি শুরু করলেন, কিন্তু ক্রমশ তা বাড়তে বাড়তে ১৫ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেল। সে ক্ষেত্রে ওই ১৫ হাজার পর্যন্ত মূল বেতন ও মহার্ঘ ভাতার উপরই সংশ্লিষ্ট কর্মীর পিএফ কাটা হবে এবং নিয়োগকারীও সেই বাবদ টাকা জমা দেবেন।

শুধু সংবাদমাধ্যমে ওই ১৫ হাজারের ঊর্ধ্বসীমা নেই। মোট মূল বেতন এবং মহার্ঘ ভাতার উপর ১২% হারে পিএফ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

তহবিল গড়া হয় কী ভাবে?

প্রভিডেন্ট ফান্ড আইন অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রতি মাসে কর্মীদের বেতন থেকে ১২% করে টাকা কেটে জমা দেয় পিএফ তহবিলে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, চটকল, রুগ্ণ সংস্থা-সহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাটা হয় ১০% করে। যে হারে টাকা কর্মীদের বেতন থেকে কাটা হয়, সেই একই পরিমাণ টাকা আবার নিয়োগকারীও জমা দেন ওই তহবিলে। নিয়োগকারীর ভাগ থেকে আবার একটা অংশ পেনশন খাতে জমা পড়ে। বাকিটা থাকে পিএফ খাতে। মাসে মাসে দু’পক্ষের ওই টাকা এবং তা থেকে পাওয়া সুদ জমেই বাড়ে তহবিলের পরিমাণ।

চাইলে বেশি জমানো কী সম্ভব?

অবশ্যই, কোনও কর্মী যদি মনে করেন, তা হলে তাঁর বেতনের ১২ বা ১০ শতাংশের থেকে বেশি টাকা পিএফ অ্যাকাউন্টে কাটাতে পারেন। তবে কর্মী নিজের বেতন থেকে বেশি হারে পিএফের টাকা কাটালেও, নিয়োগকারী কিন্তু প্রভিডেন্ট ফান্ড আইনের বাইরে গিয়ে বাড়তি টাকা ওই খাতে জমা করতে বাধ্য নন একেবারেই। যদিও অনেক সময়ে দেখা যায় যে, কোনও কোনও নিয়োগকারী নিজে থেকেই পিএফের নির্দিষ্ট হারের উপর অতিরিক্ত কিছু টাকা কর্মীদের অ্যাকাউন্টে ওই বাবদ জমা দিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে কিছু বলার নেই।

পিএফের পেনশন জমে কী ভাবে?

১৯৯৫ সালের নভেম্বরে চালু হয় পিএফের পেনশন তহবিল। আগেই বলা হয়েছে কর্মীদের মতো একই হারে নিয়োগকারীও পিএফ তহবিলে ১২ অথবা ১০ শতাংশ টাকা জমা দেন। তার মধ্যে ৮.৩৩% জমা পড়ে পেনশন হিসেবে। বাকিটা মূল পিএফ তহবিলেই। মনে রাখতে হবে দু’একটি ছাড়া সব ক্ষেত্রেই পেনশন খাতে অন্তত ১০ বছর টাকা জমা না-দিলে তা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যাবে না।

ধরুন, কেউ ৮ বছর পেনশন খাতে টাকা জমা দেওয়ার পরে চাকরি ছেড়ে দিলেন। অন্য কোথাও চাকরি নিলেনও না। সে ক্ষেত্রে ওই ৮ বছর পেনশন হিসেবে যত টাকা জমা পড়েছে, তা থোক হিসেবে হাতে পেয়ে যাবেন সংশ্লিষ্ট সদস্য।

পিএফের পেনশন জমে কী ভাবে?

একটা কথা মাথায় রাখবেন, পেনশনের জন্য টাকা কাটা হয় ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত। তার পরেও দু’বছর চাকরি থাকলে নিয়োগকারীর পুরো টাকাই জমা হয় পিএফ তহবিলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন