ডোকলামের উত্তাপ এ বার বাণিজ্য যুদ্ধে

ওই প্রতিবেদনে চিনের তরফে দাবি, দিল্লির এই পদক্ষেপের জবাব অনায়াসে দিতে পারে তারা। পাল্টা দেওয়াল তুলতে পারে সে দেশে ভারতীয় রফতানির সামনে। কিন্তু তাতে চিনের তেমন কিছু যায়-আসে না বলেই প্রতিবেদনটির দাবি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি ও বেজিং শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

ডোকলামে ভারতীয় ও চিনা সেনার তাল ঠোকাঠুকির উত্তাপ ছড়াচ্ছে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কেও। কার্যত হয়ে দাঁড়াচ্ছে বাণিজ্যিক যুদ্ধ।

Advertisement

একই ভাবে, যুদ্ধের হুমকির আঁচ পড়ছে মার্কিন মুলুক, চিন এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে চাপানউতোর আর নিষেধাজ্ঞায়।

সম্প্রতি ৯৩টি চিনা পণ্যের উপর শাস্তিমূলক শুল্ক (অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি) বসিয়েছে মোদী সরকার। আর তাতে বেজায় চটেছে বেজিং। চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে এ নিয়ে কার্যত ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চিন। বলেছে, এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত দিল্লির। নইলে তার ফল ভুগতে তৈরি থাকতে হবে তাদের।

Advertisement

ওই প্রতিবেদনে চিনের তরফে দাবি, দিল্লির এই পদক্ষেপের জবাব অনায়াসে দিতে পারে তারা। পাল্টা দেওয়াল তুলতে পারে সে দেশে ভারতীয় রফতানির সামনে। কিন্তু তাতে চিনের তেমন কিছু যায়-আসে না বলেই প্রতিবেদনটির দাবি।

শুধু তা-ই নয়, যে-সমস্ত চিনা সংস্থা ভারতের মাটিতে কিংবা ভারতীয় সংস্থায় লগ্নি করেছে বা করতে উদ্যোগী, তাদেরও সাবধান করেছে বেজিং। পরামর্শ দিয়েছে আগে এ বিষয়ে ঝুঁকি খতিয়ে দেখতে। ওই প্রতিবেদনে দাবি, বেজিং মনে করে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে এ ভাবে দেওয়াল তুললে, আখেরে ক্ষতি হবে ভারতীয় অর্থনীতিরই। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে চিনা মোবাইল সংস্থার কথা। বলা হয়েছে, ভারত যদি চিনা মোবাইল ভারতে ঢুকতে না-দেয় কিংবা চিনা সংস্থার কারখানায় তৈরি মোবাইল বিক্রির পথে বাধা খাড়া করে, তবে ভুগতে হবে এ দেশের অর্থনীতিকেই। কাজ খোয়াবেন ভারতীয় কর্মীরা।

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে উৎপাদন খরচের থেকেও কম দামে পণ্য সরবরাহের অভিযোগে ইস্পাত-সহ বিভিন্ন চিনা পণ্যের উপরে শাস্তিমূলক শুল্ক চাপিয়েছে ভারত। কিন্তু তখন বেজিং উষ্মা প্রকাশ করলেও এত কড়া সুরে হুঁশিয়ারি দেয়নি তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন ডোকলামে দুই পড়শির সামরিক তাল ঠোকাঠুকিই এত চড়া সুরের কারণ। তা ছাড়া, ভারত-চিনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের তুলনায় চিনের রফতানি বেশি প্রায় ৪,৭০০ কোটি ডলার। ফলে যুদ্ধের জিগিরে ভারতের এই বিপুল সম্ভাবনাময় বাজার কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না চিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের তরফে আগাম হুঁশিয়ারি কিছুটা সেই কারণেও।

এ দিকে, আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যে চাপান-উতোর চলছে, তারও প্রভাব পড়ছে বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের অভিযোগ ছিল, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করেনি চিন। যেখানে তারা নিজেরাই নিরাপত্তা পর্ষদের স্থায়ী সদস্য। এ দিন বেজিং জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা মেনে কিম জং উনের দেশ থেকে আকরিক লোহা, সামুদ্রিক খাবার আমদানি বন্ধ করবে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন