অশোধিত তেলের দরই চিন্তা দিল্লির

ইরানি তেলে বাড়তি সময়ে নারাজ ট্রাম্প

পরমাণু চুক্তি বাতিল করে ইরানের উপরে নতুন ভাবে নিষেধাজ্ঞা চাপালেও, তেহরানের কাছ থেকে অশোধিত তেল কেনার ব্যাপারে আটটি দেশকে ছ’মাসের ছাড় দিয়েছিল আমেরিকা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আবু ধাবি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৫১
Share:

পারস্য উপসাগরে ইরানের তেল ক্ষেত্র। রয়টার্স

পরমাণু চুক্তি বাতিল করে ইরানের উপরে নতুন ভাবে নিষেধাজ্ঞা চাপালেও, তেহরানের কাছ থেকে অশোধিত তেল কেনার ব্যাপারে আটটি দেশকে ছ’মাসের ছাড় দিয়েছিল আমেরিকা। সেই তালিকায় রয়েছে ভারতও। এপ্রিলে সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে ছাড়ের মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। কিন্তু শনিবার আমেরিকা পরিষ্কার জানিয়ে দিল, সেই সম্ভাবনা নেই। ইরানের রোজগারের পথ বন্ধ করার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

ওয়াকিবহাল মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, ওপেক এবং তাদের সহযোগী দেশগুলি আগেই জানিয়ে দিয়েছে, জানুয়ারি থেকে অশোধিত তেলের উৎপাদন দৈনিক ১২ লক্ষ ব্যারেল কমাবে তারা। সেই অনুযায়ী তেল রফতানি কমানোর কথা ঘোষণা করে দিয়েছে সৌদি আরব। তারা জানিয়েছে, চলতি মাসেই তা দৈনিক ১০% কমিয়ে ৭২ লক্ষ ব্যারেলে নামিয়ে আনা হবে। ফেব্রুয়ারিতে তেলের সরবরাহ আরও ১ লক্ষ ব্যারেল ছাঁটার পরিকল্পনা রয়েছে। এই অবস্থায় ইরানের তেল রফতানির ব্যাপারে আমেরিকার দেওয়া ছ’মাসের সময়সীমা শেষ হতে এখন সাড়ে তিন মাস বাকি। কিন্তু বাস্তবেই যদি ট্রাম্প ‘যেমন কথা তেমন কাজ’ নীতি নিয়ে চলেন, তা হলে আন্তর্জাতিক বাজারে জোড়া চাপ পড়বে অশোধিত তেলের জোগানের উপরে। সে ক্ষেত্রে জ্বালানির দামও বাড়ার আশঙ্কা থাকছে। এই পরিস্থিতির সঙ্গে কী ভাবে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে নতুন ভাবে মাথা ঘামাতে হবে দিল্লিকে। বিশেষত ভোট বছরে তেলের দাম বাড়ার মতো অপ্রিয় পরিস্থিতি এড়াতে চাইবে তারা।

মার্কিন বিদেশ দফতরে ইরান সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিনিধি ব্রায়ান হুক শনিবার বলেছেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞার ফলে ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করেছে ইরান। তাদের রোজগারের ৮০ শতাংশই আসে তেল রফতানি থেকে। রোজগারের এই রাস্তা বন্ধ করতেই হবে।’’ দীর্ঘ দিন ধরেই আমেরিকার অভিযোগ, সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত জোগাচ্ছে ইরান। তা বন্ধ করতেই তেল থেকে ইরানের রোজগারে ধাক্কা দিতে চাইছে ওয়াশিংটন। সূত্রের খবর, ভারত-সহ তেল আমদানিকারী আটটি দেশ তেল কিনলেও গত তিন মাসে ইরানের রফতানি ব্যাপক ভাবে কমেছে। তাদের থেকে আমদানি ছাঁটাই করেছে চিনও।

Advertisement

ঘটনা হল, গত দু’মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমেছিল প্রায় ৪০%। ব্যারেল প্রতি অশোধিত তেলের দাম নেমেছিল ৫০ ডলারে। এ বার ফের তা বাড়তে শুরু করেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তা ছুঁয়ে ফেলেছে ৬০ ডলার। একই সঙ্গে ডলারের নিরিখে টাকার দামও কিছুটা পড়েছে। এ সবেরই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভারতের বাজারেও। গত এক সপ্তাহে কলকাতায় পেট্রল ও ডিজেলের দাম লিটার পিছু মোট বেড়েছে যথাক্রমে ১.৪৪ টাকা ও ১.৫৩ টাকা। এই নিয়ে টানা চার দিন বাড়ল এই দুই পেট্রোপণ্যের দাম। ইন্ডিয়ান অয়েল সূত্রের খবর, এর মধ্যে শুধু আজ, রবিবারই কলকাতায় দুই পেট্রোপণ্যের দর লিটারে বাড়েছে যথাক্রমে ৪৮ ও ৫৯ পয়সা। গত এক বছরে এক দিনে কখনও এত দাম বাড়েনি ওই দুই জ্বালানির। নতুন করে তেলের দর চড়া হারে বাড়ায় ফের আমজনতার পকেটে চাপ পড়তে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন