Gold Industry In Singur

সিঙ্গুরে থমকে স্বর্ণ শিল্প তালুক, বাড়ছে সংশয়, বহু কারিগর কাজের খোঁজে ফিরে গিয়েছেন অন্য রাজ্যে

নসিবপুর পঞ্চায়েতের দেশাপাড়ার কাছে, তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটী রোডের পাশে প্রায় এক বিঘা সরকারি খাসজমি ওই তালুকের জন্য বাছা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, পড়ে থাকা ওই জমি ছিল ভূমি দফতরের হাতে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৫
Share:

তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটী সড়ক লাগোয়া সিঙ্গুরের দেশাপাড়ার এই জমিতেই সোনা-রুপোর ক্লাস্টার তৈরি হওয়ার কথা। —নিজস্ব চিত্র।

করোনার আবহে যখন ভিন্ রাজ্যের কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল সোনা-রুপোর কারিগরদের, সিঙ্গুরে সোনার ক্লাস্টার (স্বর্ণ শিল্প তালুক) তৈরির পরিকল্পনা তখনই নেওয়া হয়। লক্ষ্য ছিল, সোনা-রুপোর কাজ জানা যুবকদের এলাকায় কাজের সংস্থান করে দেওয়া, যাতে তাঁদের আর অন্যত্র যেতে না হয়। কিন্তু বাস্তবে সেই প্রকল্পের কাজ বিশেষ এগোয়নি। বহু কারিগর কাজের খোঁজে ফিরে গিয়েছেন অন্য রাজ্যে।

Advertisement

সূত্রের দাবি, নসিবপুর পঞ্চায়েতের দেশাপাড়ার কাছে, তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটী রোডের পাশে প্রায় এক বিঘা সরকারি খাসজমি ওই তালুকের জন্য বাছা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, পড়ে থাকা ওই জমি ছিল ভূমি দফতরের হাতে। প্রকল্প হলে লাগোয়া নিকাশি নালায় সমস্যা হবে— এই দাবিতে বিষয়টি নিয়ে প্রথমে স্থানীয়দের আপত্তি ছিল। আলোচনায় সমস্যা মেটে। জমিটি ব্লক ভূমি দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরে হস্তান্তর হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই সব কাজের জন্য কিছুটা বাড়তি সময় লেগে গিয়েছে। বিলম্বের কারণ এটাই।’’ প্রশাসন সূত্রের দাবি, এখন আর কোনও সমস্যা নেই। কাজ হবে। জমি সমান করে প্রকল্পের উপযুক্ত করা হবে। ঝোপঝাড়ও পরিষ্কার করা হবে।

বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, না আঁচালে বিশ্বাস নেই! বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক সুরেশ সাউয়ের মন্তব্য, ‘‘দুর্ভাগ্য, আমাদের রাজ্য সরকার শিল্পমুখী নয়। নানা দুর্নীতিতে তার মুখ ঢেকে গিয়েছে। তাই সরকারি কর্মসংস্থানের উপর ভরসা না করে দক্ষ শ্রমিককে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়। সোনার ক্লাস্টার হয় না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘যাঁরা তৈরি শিল্প ভেঙে দিলেন, তাঁরা সরকারে থেকে শিল্প গড়বেন! ঘটা করে শিল্প সম্মেলন করলেই হল!’’ তাঁর ইঙ্গিত, সিঙ্গুর ছেড়ে যাওয়া টাটাদের ন্যানো প্রকল্পের দিকে। যা বামফ্রন্ট জমানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূলের জমি আন্দোলনের জেরে গুজরাতের সানন্দে সরে গিয়েছিল। পরিবহণমন্ত্রী তথা তৃণমূল মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, ‘‘বর্তমানে শুধু ভারত নয়, নানা রাষ্ট্রের শিল্পপতিদের নির্ভরযোগ্য গন্তব্যের নাম পশ্চিমবঙ্গ। বিরোধীরা সমালোচনা করুন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী শুধু উন্নয়ন বোঝেন।’’

Advertisement

সিঙ্গুর থেকে টাটা-বিদায়ের পর থেকেই এলাকার বড় অংশের মানুষের মধ্যে সেখানে নতুন কোনও শিল্প গড়ে ওঠা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই সোনার শিল্প তালুক নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের মনে। প্রশাসন বা শাসকদল যা-ই বলুক, তালুক তৈরিতে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ার ফলে সেই প্রশ্নই আরও জোরালো ভাবে মাথা তুলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন