কেন্দ্র প্রথম থেকেই রাজি। সায় রয়েছে ঝাড়খণ্ডেরও। কিন্তু সবুজ সঙ্কেত এখনও মেলেনি নবান্ন থেকে। ফলে পুরুলিয়ায় ডিভিসি-র রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যৌথ উদ্যোগে চালানোর পরিকল্পনা এখনও থমকে। আর ডিভিসি-র দাবি, তার জন্য প্রতি মাসে ৮০ কোটি টাকা করে লোকসান হচ্ছে। যা বছর শেষে দাঁড়াবে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
গত বছর এপ্রিলেই ডিভিসি বলেছিল লোকসানের বোঝা কমাতে তারা রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭৪% অংশীদারি চেন্নাইয়ের নেভেলি লিগনাইট কর্পোরেশনকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যৌথ উদ্যোগের বাকি ২৪% থাকার কথা ডিভিসি-ঝাড়খণ্ড-পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হাতে। প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক, ঝাড়খণ্ড রাজি হলেও পশ্চিমবঙ্গ মতামত জানায়নি। ফলে সংস্থার ক্ষতির অঙ্ক বাড়ছেই। এ বিষয়ে অবশ্য রাজ্যের বিদ্যুৎ-কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি।
বণিকসভা এমসিসি-র এক সভায় বৃহস্পতিবার ডিভিসি চেয়ারম্যান অ্যান্ড্রু ল্যাংস্টি জানান, ২০১৬-’১৭ সালে সংস্থা লোকসান গুনেছে ১০০০ কোটি টাকার মতো। তার মধ্যে রঘুনাথপুরের জন্য ক্ষতি হয়েছে ৮০০ কোটি। তবে ল্যাংস্টির আশা শীঘ্রই রাজ্যের সবুজ সঙ্কেত মিলবে। তাঁর দাবি, সম্প্রতি দিল্লিতে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর এ নিয়ে কথা হয়েছে।
ডিভিসি-র ঘাড়ে প্রায় ২৫,০০০ কোটি ঋণের বোঝা। এতে রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অংশ প্রায় ৫০০০ কোটি। যৌথ উদ্যোগ গড়া হলে তারা ডিভিসি-র মোট ঋণের ওই ৫০০০ কোটি টাকা শোধ করে দেবে নেভেলি। ফলে এক ধাক্কায় বছরে অন্তত ৯০০ কোটি টাকা সুদের বোঝা ঘাড় থেকে নামবে। এই লোকসান কমাতে পারলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি এক বছরের মধ্যে ‘না লাভ-না ক্ষতি’-র স্তরে পৌঁছে যেতে পারে বলে সংস্থা সূত্রে খবর।
বছর খানেক আগে রঘুনাথপুরে ডিভিসি ১২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গড়ে। কিন্তু খদ্দের না-পাওয়ার জেরেই যৌথ উদ্যোগ গড়ার এই সিদ্ধান্ত। নেভেলির হাতে ক্রেতা আছে বলে তারা টাকা ঢালতে রাজিও হয়।