নগদে বিক্রিতে রাশ টানছে নেট বাজারও

বড় নোট নিচ্ছে না সংস্থা। আবার ক্রেতার হাতেও ১০০ টাকার নোট কম। তাই ক্রেতার দরজায় পণ্য পৌঁছে দিয়ে নগদে দাম নেওয়ার প্রক্রিয়াতেই (ক্যাশ-অন-ডেলিভারি) রাশ টানছে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন, স্ন্যাপডিল ও বিগ বাস্কেটের মতো প্রথম সারির ই-কমার্স সংস্থা।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০৫
Share:

বড় নোট নিচ্ছে না সংস্থা। আবার ক্রেতার হাতেও ১০০ টাকার নোট কম। তাই ক্রেতার দরজায় পণ্য পৌঁছে দিয়ে নগদে দাম নেওয়ার প্রক্রিয়াতেই (ক্যাশ-অন-ডেলিভারি) রাশ টানছে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন, স্ন্যাপডিল ও বিগ বাস্কেটের মতো প্রথম সারির ই-কমার্স সংস্থা।

Advertisement

বাজার থেকে ৫০০, ১,০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার কথা কেন্দ্র জানানোর পরেই ক্যাশ-অন-ডেলিভারি ব্যবস্থায় লেনদেনের পরিমাণ হাজারের কম রাখার নির্দেশ দিয়েছে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন। যাতে ক্রেতা ও সংস্থা, দু’পক্ষেরই সমস্যা দূর করতে নগদে লেনদেন ধাপে ধাপে কমিয়ে আনা যায়। পাশাপাশি ফ্লিপকার্ট ক্রেতাদের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, গিফ্ট কার্ড, পেটিএম, অক্সিজেনের মতো ডিজিটাল ওয়ালেট ব্যবহার করতেও আর্জি জানিয়েছে।

আবার নয়া নিয়মে ক্রেতাদের ধাতস্থ করতে জিনিস পৌঁছনোর তারিখ পিছোনোর সুযোগ দিচ্ছে স্ন্যাপডিল। পণ্য পৌঁছে নগদ নেওয়ার ক্ষেত্রে তারাও টাকার অঙ্ক দু’ হাজারের মধ্যে রাখছে।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, নোট বাতিলের পরে প্রথম দিনেই অন্তত ৪০% জিনিস ফেরত গিয়েছে নেট বাজারে। মার খেয়েছে ব্যবসা। ডামাডোলের আবহে ক্রেতারা নতুন অর্ডার ফের কবে দেবেন, তা-ও অনিশ্চিত। তাদের আশঙ্কা, বিশেষত ছোট ও আধা শহরে ব্যবসা অনেকটা কমবে। কারণ বড় শহরের বাইরে নগদ দামে কেনার চলই বেশি।

তবু দুশ্চিন্তাকে পাশ কাটিয়ে আপাতত দীর্ঘ মেয়াদি লাভেই নজর অনলাইন বাজারের। ফ্লিপকার্ট মনে করছে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ গোটা ‘খেলা’টাই বদলে দেবে। সংস্থার মুখপাত্রের দাবি, এ বার কেনাকাটায় ‘ডিজিটাল পেমেন্ট’ বা নেটের মাধ্যমে দাম মেটানোর নতুন নতুন দরজা খুলবে। লাভবান হবে ই-কমার্স দুনিয়া। প্রতিযোগীর সুরে সুর মিলিয়ে স্ন্যাপডিলের দাবি, নগদে লেনদেনের সুযোগ কমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে নেট বাজারের কেনাকাটা।

ঝোঁক যে-দিকে

ব্যবসা কম হয়েছে চিরাচরিত ইট-কাঠ-পাথরের দোকানপাটেও। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বেচে যে-সব রিটেল বিপণি, তাদের ব্যবসায় তেমন টান পড়েনি। অর্থাৎ পাড়ার বাজার বা মুদিখানায় যা ১০০ টাকার অভাবে কেনা হয়নি, তা পকেটে পুরতে অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন বিগ বাজার বা স্পেনসার্সে। যারা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের দৌলতে ব্যবসা করেছে পুরোমাত্রায়। ক্রেতা ৫০০ ও ১,০০০ টাকা ব্যবহার করতে না-পারায় মার খেয়েছে শাড়ি, জামাকাপড়ের দোকানও।

তবে সাময়িক এই ক্ষতি মেনেও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া। সংগঠনের প্রধান কুমার রাজাগোপালনের দাবি, নগদ লেনদেন কমায় ব্যবসা সাময়িক ভাবে কিছুটা বাধা পেলেও আখেরে লাভ হবে। বাজার সংগঠিত হবে। স্বচ্ছ হবে লেনদেনও।

ডিজিটাল পেমেন্টের দিকে নজর রেখে নিজেদের পরিকাঠামো তৈরি করছে ইট-কাঠ-পাথরের দোকানপাটও। যেমন স্থানীয় বিস্কুট নির্মাতা বিস্কফার্ম-এর এমডি বিজয় সিংহ জানান, ভবিষ্যতে ডিজিটাল মাধ্যমে দাম চোকানোর সুযোগ দিতে চাইছে তারা। জার্মান বহুজাতিক মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি ইন্ডিয়ার এমডি অরবিন্দ মেডিরাট্টার দাবি, ভবিষ্যতে মোবাইলের মাধ্যমেও টাকা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন