কৃষি ঋণ মকুবে উদ্বিগ্ন কৌশিকও

সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩তম সমাবর্তনে কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘কৃষি ঋণ নিয়মিত মকুব করা হতে থাকলে দেশের অর্থনীতিতে তা মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। কেন্দ্রের এখন থেকেই নজর দেওয়া দরকার।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫১
Share:

বার্তা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে কৌশিক বসু। নিজস্ব চিত্র

কৃষি ঋণ মকুব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন ও দেশে সবুজ বিপ্লবের কাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত এম এস স্বামীনাথন। এ বার এ নিয়ে সতর্কবার্তা দেশের প্রাক্তন আর্থিক উপদেষ্টা তথা অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুরও। তাঁর মতে, ওই সিদ্ধান্ত সাময়িক স্বস্তির কারণ হলেও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। একই সঙ্গে জিডিপি বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া নিয়েও উদ্বেগের সুর তাঁর গলায়।

Advertisement

সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩তম সমাবর্তনে কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘কৃষি ঋণ নিয়মিত মকুব করা হতে থাকলে দেশের অর্থনীতিতে তা মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। কেন্দ্রের এখন থেকেই নজর দেওয়া দরকার।’’

ব্যালটের লড়াই জিততে বিভিন্ন রাজ্যে ঋণ মকুবের ঢালাও প্রতিশ্রুতি ছিল। কংগ্রেস তিন রাজ্যে সেই পথে হাঁটার পরে জল্পনা, নরেন্দ্র মোদী সরকারও তা ভাবতে পারে। যদিও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজন। স্বামীনাথনের বক্তব্য ছিল, সাময়িক পদক্ষেপ করা হলেও তা কৃষি নীতির অংশ হওয়া উচিত নয়।

Advertisement

কৃষির পাশাপাশি জিডিপি ও কর্মসংস্থান নিয়েও এ দিন সংশয় প্রকাশ করেছেন কৌশিকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে দেশের অর্থনীতির হাল খারাপ। জিডিপি বৃদ্ধির হার খুব কম।’’ তাঁর মতে, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ ও কৃষি, দু’টিই এখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নোট বাতিলের প্রভাব এখনও রয়ে গিয়েছে কৃষিতে।

এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারের ভাগ কেন্দ্রকে দেওয়া নিয়ে বিতর্কেও উদ্বেগের সুর ছিল কৌশিকবাবুর গলায়। সেই সুযোগ থাকলেও তা দেওয়া উচিত কি না, তা শীর্ষ ব্যাঙ্কের হাতেই ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি। ঠিক তেমনই অর্থনীতির উন্নয়নের ভাগ কতটা প্রান্তিক মানুষ পাচ্ছেন, সেটাও বড় বিষয় অর্থনীতির এই অধ্যাপকের কাছে। তাঁর মতে, দেশের প্রান্তিক মানুষদের অবস্থা সন্তোষজনক নয়। শুধু বড় সংস্থার লাভের পরিমাণ নয়, দেশের উন্নয়ন মাপতে সেই সব প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নও জরুরি। সমাবর্তনে তাই পড়ুয়াদের দেশের সার্বিক উন্নতির দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন কৌশিকবাবু।

কৌশিকবাবুর কথায় এ দিন এসেছে ব্যক্তিগত নানা গল্পও। তিনি বলেন, ‘‘আমার মায়ের তখন অনেক বয়স। আমি অর্থনীতিবিদ হিসাবে দেশ-বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই। মা সেই সময় ইকনমিস্ট আর কমিউনিস্ট কথাটা গুলিয়ে ফেলতেন। এক বার মা এক ব্যক্তিকে বলেছিলেন আমার ছেলে দেশের এক জন বড় কমিউনিস্ট।’’ এই কথা শুনে তখন অডিটোরিয়ামে হাসির রোল উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন