কর্মীদের ঝোঁক সাধারণ বিপণির দিকে

উৎসবের মরসুমে ডেলিভারি বয়ে টান, শঙ্কা নেট-বাজারে

যুদ্ধ শুরু হতে দেরি নেই। ভাণ্ডারে রসদ মজুত। শান দেওয়া চলছে হাতিয়ারেও। কিন্তু সৈন্য সংখ্যা কম পড়ায় জয় নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে। নেট-বাজার বনাম ইট-কাঠ-পাথরের দোকানের লড়াই শুরু হয়েছে আগেই। উৎসবের মরসুমে ক্রেতা টানতে মোটা অঙ্কের ছাড় দিয়েই যুদ্ধ জেতার কৌশল নিয়েছে অনলাইন দোকানিরা।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৯
Share:

যুদ্ধ শুরু হতে দেরি নেই। ভাণ্ডারে রসদ মজুত। শান দেওয়া চলছে হাতিয়ারেও। কিন্তু সৈন্য সংখ্যা কম পড়ায় জয় নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে।

Advertisement

নেট-বাজার বনাম ইট-কাঠ-পাথরের দোকানের লড়াই শুরু হয়েছে আগেই। উৎসবের মরসুমে ক্রেতা টানতে মোটা অঙ্কের ছাড় দিয়েই যুদ্ধ জেতার কৌশল নিয়েছে অনলাইন দোকানিরা। কিন্তু শেষ দফায় পণ্য ক্রেতার বাড়ি পৌঁছতে যাঁদের ভরসায় থাকে নেট দুনিয়া, এ বার টান পড়েছে সেই ডেলিভারি বয়ের সংখ্যায়। কারণ এ ধরনের কর্মীদের অনেকেই ঝুঁকছেন সাধারণ বিপণির দিকে, যারা ইতিমধ্যেই বাড়তি কর্মী নিয়ে নিয়েছে বলে বাজার সূত্রের খবর। অথচ যুদ্ধের ময়দানে এই ডেলিভারি বয় বা জিনিস পৌঁছে দেওয়ার সৈনিকই নেট-বাজারের এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম বাজি।

তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, চাহিদা অনুযায়ী সব মিলিয়ে উৎসবের সময়ে বাড়তি ৫০ হাজার ডেলিভারি বয় চাই। মূলত ছ’টি বড় শহরে রয়েছে এই চাহিদা। কোয়েস কর্প, কুইকর জবস-এর মতো সংস্থার দাবি, এই সময়ে চাহিদা বেড়ে যায় প্রায় ২০%। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমপক্ষে ১০% কম।

Advertisement

উৎসবের মরসুমে ক্রেতাদের মন পেতে মরিয়া নেট-বাজার। জামাকাপড়, ব্যাগ, জুতো থেকে শুরু করে মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি— যাবতীয় জিনিস বিক্রির এটাই মোক্ষম সময়। দক্ষিণ ভারতের ওনাম থেকে শুরু করে বাংলার দুর্গাপুজো। তারপরেই দেশ জুড়ে দীপাবলি ও বড়দিনের রোশনাই। সব মিলিয়ে চিরাচরিত বিপণির মতো নেট দোকানিরাও বছরের ৬০ শতাংশের বেশি ব্যবসা এই চার মাসে করেন।

আগামী মাসের প্রথম ছ’দিন ধরে চলবে ভারতের নেট-বাজার দখলের লড়াই। অ্যামাজন বনাম ফ্লিপকার্ট। যুযুধান দুই সংস্থাই উৎসবের বাজারে নিজেদের নাম খোদাই করতে ঢালাও ছাড়ের অস্ত্র শানাচ্ছে। শুরু হচ্ছে অ্যামাজনের ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান ফেস্টিভাল’ ও ফ্লিপকার্টের ‘বিগ বিলিয়ন ডে’ সেল। তালিকায় রয়েছে স্ন্যাপডিলও। আর এই যুদ্ধে জিততে ডেলিভারি বয়রা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা ফ্লিপকার্ট ও স্ন্যাপডিলের কর্মী নিয়োগের ঘোষণাতেই স্পষ্ট। দু’টি সংস্থারই দাবি, চাপ সামলাতে অস্থায়ী ১০ হাজার কর্মী নিচ্ছে তারা।

রোজগারের সুযোগও ভালই। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, গড়ে মাসিক ২০ হাজার টাকা আয় করেন ডেলিভারি বয়। ক্ষেত্র বিশেষে তা আরও বেশি হতে পারে। কিন্তু টাকা দিয়েও এ ধরনের কর্মী পেতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে ই-কমার্স সংস্থার। স্থানীয় ছেলে ছাড়া এই কাজ সুষ্ঠু ভাবে করা সহজ নয়। আর স্থানীয়দের অধিকাংশই ই-কমার্স সংস্থা নয়। ঝুঁকছেন বড় বিপণির দিকে। রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার দাবি, ফিউচার গোষ্ঠী, শপার্স স্টপ, আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর মতো বিভিন্ন সংস্থা উৎসবের মরসুম সামলাতে আগেই অতিরিক্ত কর্মী নিয়েছে। ফলে টান পড়েছে ই-কমার্স সংস্থার কর্মী সংখ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন