জিপ ব্র্যান্ডের গ্র্যান্ড চেরোকি।
আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘জিপ’ ব্র্যান্ড ভারতে পা রাখবে নতুন বছরে। বর্ষশেষে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিল ব্র্যান্ডটির প্রস্তুতকারক ইতালীয়-মার্কিন বহুজাতিক ফিয়াট -ক্রাইসলার অটোমোবাইলস (এফ সি এ)। আগ্রহী ক্রেতাদের আলোচনার টেবিলে জায়গা করে দিতে বুধবার ভারতে ওয়েবসাইট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই নেট-দুনিয়ার অন্য মাধ্যমগুলিকেও হাতিয়ার করছে জিপ। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আপাতত জিপ ব্র্যান্ডের গাড়িগুলি এ দেশে পুরোদস্তুর আমদানি করে বিক্রি করবে সংস্থা।
ছোট গাড়ির বাজারের তকমা ছাড়িয়ে ভারতে গাড়ির বাজার এখন অনেক বেশি সাবালক। বড় ও দামি গাড়ির বাজার ক্রমশ ছড়াচ্ছে। এমনকী অপেক্ষাকৃত ছোট শহরেও। তেমনই আধুনিক প্রজন্মের হাত ধরে গাড়ি শুধুমাত্র আর গন্তব্যে পৌঁছনোর হাতিয়ার নয়। বরং গাড়ি চালানোর শখটাকেই পুরোদস্তুর উসুল করতে চায় তরুণ প্রজন্ম। ফলে বছর কয়েক আগেই ‘স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল’ বা এস ইউ ভি-র মতো বড় গাড়ির চাহিদাও বেড়েছে।
এ বার সেই বাজারকে ধরতে চায় দেশি-বিদেশি সব সংস্থাই। দৌড়ে পিছিয়ে নেই প্রায় ৭৫ বছরের পুরনো ব্র্যান্ড জিপ-ও। প্রসঙ্গত, এফসিএ-র ভাঁড়ারে জিপের পাশাপাশি আলফা রোমেও, আবার্থ, ক্রাইসলার, ফিয়াট, ল্যান্সিয়া-র মতো ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ফেরারি এবং মাসেরাত্তি-ও রয়েছে। তবে মহীন্দ্রার সাবেক যে-জিপ গাড়ি ভারতের বাজারে পরিচিত, এফসিএ-র এসইউভি-র সঙ্গে তার মিল থাকবে না। প্রসঙ্গত, মহীন্দ্রার ক্ষেত্রে জিপ ব্র্যান্ডের উৎপাদন মাঝখানে বন্ধ ছিল। বছর কয়েক আগে ‘থর’ ব্র্যান্ড-নামে তারা নতুন করে তৈরি শুরু করেছে জিপের মতো গাড়ি।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির অটো এক্সপো-য় জিপ ব্র্যান্ডের গাড়িগুলি আমজনতার সামনে প্রদর্শন করবে এফসিএ। কিন্তু তার আগেই সম্ভাব্য ক্রেতাদের কাছে উত্তেজনার আঁচ পৌঁছে দিতে প্রাক্ পর্বে এই ওয়েবসাইট প্রকাশের সিদ্ধান্ত সংস্থাটির, যেখানে তাদের ‘বেস্ট সেলিং’ গাড়ি — গ্র্যান্ড চেরোকি এবং র্যাঙ্গলার আনলিমিটেড-এর ঝলকও দেখতে পাবেন তাঁরা।
এফসিএ ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ও এমডি কেভিন ফ্লিন এ দিন বলেন, ‘‘ভারতে এক নতুন অভিযানে পা রাখল এফসিএ। আশা, এই উল্লেখযোগ্য মাইলফলকটি দেশের বাজারে জিপকে উল্লেখযোগ্য জায়গা করে দেবে।’’ সাইটের পাশাপাশি তাই ক্রেতা মহলে আগ্রহ বাড়াতে ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামের মতো ডিজিটাল মাধ্যমের সাহায্য নিচ্ছে সংস্থা।
মাস কয়েক আগেই এফসিএ জানায়, মহারাষ্ট্রের রঞ্জনগাঁওয়ে টাটা মোটরসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি কারখানা সম্প্রসারণের জন্য তারা ২৮ কোটি ডলার লগ্নি করবে। সেটি চালু হওয়ার কথা ২০১৭ সালে। ভবিষ্যতে রঞ্জনগাঁওয়ে জিপ তৈরির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়নি সংস্থা। উল্লেখ্য, ভারতে যন্ত্রাংশ জুড়ে গাড়ি তৈরির পথে হেঁটেছে মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ, অডি-র মতো সংস্থা। সহজে ক্রেতার দরবারে পৌঁছতে এফসিএ-ও সেই পথে হাঁটবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।