নোট নাকচের ক্ষত এখনও টাটকা। তার উপরে এ বার জিএসটি জামানায় বাড়ি-ফ্ল্যাটের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছে আবাসন শিল্প।
নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের দাবি, জিএসটি চালু হলে, ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। একে নোট বাতিলের জেরে চাহিদা জোর ধাক্কা খেয়েছে। তার উপরে এখন জিএসটি-র দৌলতে দাম বাড়লে, তা একেবারে তলানিতে ঠেকতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।
ক্রেডাই বেঙ্গলের কর্তা নন্দু বেলানি জানান, এখন চালু কর ব্যবস্থায় নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটের দাম বাবদ যে-টাকা ধার্য হয়, জমির দর তার মধ্যেই ধরা থাকে। পরিষেবা কর নেওয়ার সময়ে ফ্ল্যাটের মোট দাম থেকে তার ৭০-৭৫% ওই জমির দাম হিসেবে বাদ দেওয়া হয়। পরিষেবা কর গুনতে হয় বাকিটুকুর উপরে। অর্থাৎ, ফ্ল্যাটের মোট দামের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের উপর ১৫% হারে পরিষেবা কর গুনতে হয়। যা আদপে দাঁড়ায় মোট দামের ৩.৭৫% থেকে ৪.৫%। এক কোটি টাকার কম দামের বাড়িতে ৭৫% জমির দাম হিসেবে বাদ দেওয়া হয়। এক কোটির বেশি দামের বাড়িতে বাদ যায় ৭০%। কিন্তু জিএসটি জমানায় পুরো টাকার উপরেই ১২% কর গুনতে হবে। আর তাতেই ফ্ল্যাটের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
ধরা যাক, একটি ফ্ল্যাটের দাম ৫ লক্ষ টাকা। তার ৭৫% বাদ যাওয়া মানে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার উপরে পরিষেবা কর লাগছে না। তা দিতে হচ্ছে বাকি ১ লক্ষ ২৫ হাজারের উপরে। ১৫% হারে পরিষেবা কর গুনতে হলে, লাগবে ১৮,৭৫০ টাকা। কিন্তু জিএসটি চালু হলে, মোট ৫ লক্ষ টাকার উপরেই ১২% হারে কর নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে করের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ হাজার টাকা।
জিএসটিতে কাঁচামালের উপরে আগে জমা দেওয়া করের টাকা ফেরত পাওয়ার সুযোগ সিমেন্ট, রড ইত্যাদি নির্মাণ উপকরণের ক্ষেত্রে আছে। কিন্তু ক্রেডাইয়ের অভিযোগ, তা জমির বেলায় নেই। তাদের প্রশ্ন, পরিষেবা কর তো গুনতে হয় কোনও পরিষেবা দেওয়ার জন্য। তা জমির উপরে গুনতে হবে কেন?
তা ছাড়া ক্রেডাইয়ের মতে, রাজ্যে স্ট্যাম্প ডিউটির হার তুলনামূলক ভাবে চড়া। তাই এখানে ক্রেতাদের উপরে বোঝা আরও বেশি চাপবে বলে তাদের ধারণা। বেলানির দাবি, ১২% জিএসটি ও ৮% স্ট্যাম্প ডিউটি মিলিয়ে ক্রেতাদের উপর করের বোঝা দাঁড়াবে ২০%। এতে কেন্দ্রের সকলের জন্য ছাদ তৈরির নীতিও ধাক্কা খাবে বলে তাঁর ধারণা। ভবিষ্যতে স্ট্যাম্প ডিউটি জিএসটি-তে মিশে যাওয়া উচিত বলেও মনে করে ক্রেডাই।