Flat

কলকাতায় বিক্রি বাড়ল ১৪৯ শতাংশ! আবাসন বিক্রির তথ্যে রমরমা বিলাসবহুলের

সম্প্রতি বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম এবং আবাসন উপদেষ্টা সিবিআরই-র সমীক্ষায় দাবি, জানুয়ারি-জুনে কলকাতা-সহ ভারতের সাতটি প্রথম সারির শহরে দামি ফ্ল্যাট-বাড়ি বিকিয়েছে ৭০০০-এর বেশি। সর্বাধিক দিল্লিতে, ৩৯৬০টি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৮:২৯
Share:

গত ছ’মাসে বিলাসবহুল আবাসনের বিক্রি বাড়ল ৮৫%। —প্রতীকী চিত্র।

দেশে গত ছ’মাসে বিলাসবহুল আবাসনের বিক্রি বাড়ল ৮৫%। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কলকাতায় সেগুলির বিক্রি বৃদ্ধির হার পৌঁছল ১৪৯ শতাংশে।

সম্প্রতি বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম এবং আবাসন উপদেষ্টা সিবিআরই-র সমীক্ষায় দাবি, জানুয়ারি-জুনে কলকাতা-সহ ভারতের সাতটি প্রথম সারির শহরে দামি ফ্ল্যাট-বাড়ি বিকিয়েছে ৭০০০-এর বেশি। সর্বাধিক দিল্লিতে, ৩৯৬০টি। দাম ৬ কোটি টাকার বেশি। আবাসন বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইট ফ্রাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, গত জানুয়ারি-মার্চে কলকাতায় ১ কোটি টাকার বেশি মূল‍্যের আবাসন বিক্রি হয়েছে ৯০৭টি। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১০০% বেশি। তবে বিক্রি বৃদ্ধি সর্বোচ্চ ২-৫ কোটি টাকা দামের আবাসনের, ১৪৯%।

উল্টো দিকে ক্রমশ কমছে কম দামিগুলির (৪০-৪৫ লক্ষ টাকা) বিক্রিবাটা। এক সময় সারা দেশে যেগুলির চাহিদা ছিল সব থেকে বেশি। নির্মাণ সংস্থাগুলির দাবি, সাধ্যের আবাসনের বিক্রি না বাড়লে এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বহু দিন ধরেই বিলাসবহুল আবাসনগুলির রমরমা। যা দেশের আয় বৈষম্যকে তুলে ধরছে। সব কিছুর বেড়ে যাওয়া খরচ সামলানোর পরে সাধারণ মধ্যবিত্ত নাগরিকদের বেশির ভাগই আর নিজস্ব আস্তানা কেনার কথা ভাবতে পারছেন না। যার ফল, সাধ্যের আবাসন বিক্রিতে ভাটা। অন্য দিকে, উচ্চবিত্তরা আরও বিত্তবান হচ্ছেন। কোটি কোটি টাকার আবাসন কিনছেন তাঁরা। কেউ কেউ জমি-বাড়িতে টাকা খাটাচ্ছেন। অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলেন, “দেশে আয়ের অসাম্য বাস্তব সত্য। আবার বিশ্বব‍্যাঙ্কের রিপোর্টে জিনি কো-এফিশিয়েন্ট অনুযায়ী করা হিসাবে বলা হয়েছে আয়ের অসাম‍্য কম থাকা দেশের তালিকায় ভারত চতুর্থ। তবে বিলাসবহুল বাড়ি বিক্রি যে ভাবে বাড়ছে, তাতে স্পষ্ট বিত্তবান মানুষের হাতে প্রচুর সম্পদ।’’ বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বারের অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির প্রধান স্মরজিৎ মিত্রেরও দাবি, কিছু মানুষের সম্পদ বেড়েই চলেছে। অঢেল খরচ করছেন তাঁরাই। নিয়মিত আবাসনে লগ্নি করছেন। কিন্তু কম দামি ফ্ল্যাট-বাড়ির ক্রেতা কমে গিয়েছে।

অজিতাভ এবং স্মরিজিৎ, দু’জনেই মনে করছেন, আন্তর্জাতিক অনিশ্চয়তা শেয়ার বাজারকে অস্থির করে রাখায় আবাসনে লগ্নি করছেন একাংশ। তবে স্মরজিতের কথায়, ‘‘যে কারণেই আবাসন কেনা হোক, কোটি কোটি টাকা না থাকলে এত দামি বাড়ি কেনা যায় না। এই শ্রেণির মানুষ অল্প। তাঁদের সিন্দুক উপচে পড়ছে। অথচ দেশের সিংহভাগ মানুষের হাতে দৈনন্দিন জীবনযাপনের পরে সঞ্চয়ের টাকাই থাকে না। বাড়তি খরচ করতে হলে পুরনো সঞ্চয়ে হাত দিতে হচ্ছে। এই দিকে কেন্দ্রের কোনও নজর নেই।’’

সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, একই প্রবণতা গাড়ি বাজারেও। ছোট কম দামি গাড়ির বদলে বিক্রি বাড়ছে বড় এবং দামি গাড়ির। এমনকি মার্সিডিজ় বেঞ্জ-এর মতো বিলাসবহুল গাড়িও বিক্রি বৃদ্ধির হারে উৎসাহিত হয়ে এ দেশে ব্যবসা বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে। গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম জানিয়েছে, সামগ্রিক গাড়ি বিক্রি গত এক বছর ধরে তেমন না বাড়লেও, ইউটিলিটি ভেহিক্‌লের (ইউভি) বেড়েছে দ্রুত। ইউভি-কে দামি গাড়ির তালিকায় ধরা হয়। মে মাসে দেশে যখন ছোট গাড়ির বিক্রি ১২ শতাংশের বেশি কমেছে, তখন ইউভি বেড়েছে ৭.৬%।

বিলাসবহুল আবাসন

মুম্বই ও দিল্লিতে ৬ কোটি টাকা বা তার বেশি দামি।

বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদে ৫ কোটি টাকা বা তার বেশি।

কলকাতা, পুণে ও চেন্নাইতে ৪ কোটি টাকা বা তার বেশি হলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন