আইনি জটে আটকে গেল গ্যাসলাইন প্রকল্প

আইনি জটিলতায় আগেই থমকে গিয়েছে বিচুনিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ার পরিকল্পনা। এ বার সেই একই কারণে আটকে গেল কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ (সমুদ্রের নীচে পাতা গ্যাসের পাইপ) প্রকল্পও। আদালতের নির্দেশ, প্রকল্পের জন্য দরপত্র চাইলেও, তাদের অনুমতি ছাড়া ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ (কাজ শুরুর নির্দেশ) দিতে পারবে না কলকাতা বন্দর।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৬
Share:

আইনি জটিলতায় আগেই থমকে গিয়েছে বিচুনিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ার পরিকল্পনা। এ বার সেই একই কারণে আটকে গেল কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ (সমুদ্রের নীচে পাতা গ্যাসের পাইপ) প্রকল্পও। আদালতের নির্দেশ, প্রকল্পের জন্য দরপত্র চাইলেও, তাদের অনুমতি ছাড়া ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ (কাজ শুরুর নির্দেশ) দিতে পারবে না কলকাতা বন্দর। ফলে বন্দর গড়ার মতো ওই গ্যাসলাইন পাতার পরিকল্পনাও বিশ বাঁও জলে।

Advertisement

কলকাতা বন্দর প্রস্তাবিত ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ প্রকল্প স্থানান্তরিত করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মুম্বইয়ের সংস্থা আম্মালাইন্স। তাদের দাবি, ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, বিচুনিয়ায় বন্দর গড়াই সম্ভব নয়। কারণ, গ্যাসের মতো দাহ্য পদার্থ প্রস্তাবিত বন্দর এলাকার মধ্যে দিয়ে গেলে, বড়সড় বিপদের আশঙ্কা।

কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বিচুনিয়ায় বন্দর তৈরির জন্য তাদের কাছে অনুমতি নেওয়া হয়নি। অথচ ১৯৬৩ সালের মেজর পোর্ট ট্রাস্টস আইন অনুযায়ী তা বাধ্যতামূলক। আবার আম্মালাইন্সের অভিযোগ, বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রকল্পের বিবরণ দিয়ে অনুমোদন আগেই নেওয়া হয়েছে। বাম জমানায় ২০১০ সালের মে মাসে আম্মালাইন্সকে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির বরাত দিয়েছিল রাজ্য। তার আগে বৈঠক হয়েছিল রাজ্য, কলকাতা বন্দর ও আম্মালাইন্সের মধ্যে। সংস্থার অভিযোগ, সব জেনেও তাদের প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকার মধ্যে দিয়ে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল কলকাতা বন্দর।

Advertisement

বন্দর কর্তৃপক্ষের সওয়াল, আম্মালাইন্সের বরাত নাকচ করেছে রাজ্য। নভেম্বরে সংস্থাকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়েও দিয়েছে তারা।

রাজ্যের ওই পদক্ষেপের কারণেই অবশ্য আইনি জটে জড়িয়ে গিয়েছে বিচুনিয়ার বন্দর প্রকল্প। পূর্ব মেদিনীপুরের বিচুনিয়ায় বন্দর গড়তে মেকা গোষ্ঠীর শাখা সংস্থা আম্মালাইন্স-কে লেটার অব ইনটেন্ট দিয়েছিল বাম সরকার। কিন্তু বিস্তর টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত তা নাকচ করে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে অভিযোগ তুলে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালতে যায় আম্মালাইন্স। সেই আবেদনের ভিত্তিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন রায় দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ, প্রকল্পের জন্য দরপত্র চাইলেও, তাদের অনুমতি ছাড়া বন্দর গড়ায় ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দিতে পারবে না রাজ্য। ফলে আটকে গিয়েছে ছ’হাজার কোটির বন্দর গড়ার পরিকল্পনা। তার উপর এই নতুন আইনি সমস্যার কারণে এ বার অনিশ্চিত হয়ে পড়ল চার হাজার কোটির এলএনজি (লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস) টার্মিনাল প্রকল্পও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন