ফেব্রুয়ারিতে কৃষকদের রোষ আছড়ে পড়েছিল মহারাষ্ট্রে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী সেই আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে প্রশ্ন ছুড়েছিলেন— সরকার কয়েক জন শিল্পপতির দেড় লক্ষ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ মকুব করে দেয়, কিন্তু অসহায় কৃষকদের সামান্য কৃষিঋণ মকুব করে না। অনেকেই
ভেবেছিলেন ভোটে সেই আন্দোলনের ফসল তুলবে বিরোধী দলগুলি। কিন্তু দেখা গেল রাজ্যের ৪৮টি আসনের মধ্যে ৪১টিতে জয় নিশ্চিত করে বিজেপি-শিবসেনা নিজেদের গড় ধরে রেখেছে। কংগ্রেস ও এনসিপি জোট পেয়েছে ৬টি আসন, গত বারের চেয়েও একটি কম। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা কংগ্রেসের। একটি আসনে জয় নিশ্চিত তাদের।
জোটের ৪১টি আসনের মধ্যে বিজেপি ২৩টি এবং শিবসেনা ১৮টিতে নিজেদের জয় নিশ্চিত করেছে। নাগপুর আসনে নিতিন গডকড়ী রাত পর্যন্ত প্রায় ৭৭ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। বারামতী কেন্দ্রে এনসিপি-প্রধান শরদ পওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলে দেড় লক্ষ ভোটে জয়ী হলেও ভাইপো পার্থ পওয়ার মাভালে পরাজিত হয়েছেন। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা সুশীলকুমার শিন্দে শোলাপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থীর কাছে হেরেছেন লাখ খানেক ভোটে। নানদেড়ে হেরেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অশোক চহ্বাণ।
কিন্তু বিরোধীদের এই হাল হল কেন? সঞ্জয় শাঠে জানালেন, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ও দেশভক্তির জোয়ারে ভেসে গিয়েছে নাশিকের পেঁয়াজ চাষিদের সমস্যা। গত মরসুমে পেঁয়াজ বিক্রির ১০৬৪ টাকা প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে মানি অর্ডার করে পাঠিয়েছিলেন সঞ্জয়।
এই নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল পড়ায় একটি উচ্চ পর্যায়ের দল সঞ্জয় ও অন্য পেঁয়াজ চাষিদের কাছে গিয়ে তাঁদের সমস্যার কথা শোনে। সঞ্জয় এ দিন বলেন, ‘‘এই ঘটনার পরে চলতি মরসুমে পেঁয়াজ চাষিরা কিলোপ্রতি ১০ টাকা করে দাম পাচ্ছেন। এতে তাঁদের ক্ষোভে অনেকটাই মলম পড়েছে। এর পরে বালাকোটে সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে বিজেপি-শিবসেনার টানা প্রচারে চাষিদের বড় অংশই মনে করেছেন, মোদীই দেশকে সুরক্ষা দিতে পারেন।’’ সঞ্জয় বলেন, নাশিকের চাষিরা মূলত নাশিক গ্রামীণ এবং দিলদরি কেন্দ্রের ভোটার। এই দু’টি কেন্দ্রেই দলিত ভোট এনসিপি-র দিকে যায়নি। গিয়েছে প্রকাশ অম্বেডকরের বঞ্চিত বিকাশ আগাড়ির ঝুলিতে। হিসেব বলেছে, অন্তত ৯টি আসন এই ভোট ভাগাভাগির ফলে কংগ্রেস-জোটের হাতছাড়া হয়েছে।