তেলের দরে রোজ বদল ১৬ই থেকে

২০১০ ও ২০১৪ সালে পেট্রোল ও ডিজেলের দর বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরে এখন প্রতি মাসের ১ ও ১৬ তারিখ তেলের দরের বাড়া-কমা ঘোষণা করে সংস্থাগুলি। তার বদলে এ বার তা জানানো হবে রোজই। পরীক্ষা -মূলক ভাবে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে পুদুচেরি, বিশাখাপত্তনম, উদয়পুর, জামশেদপুর ও চণ্ডীগড়ে। সেখানে রোজ রাতে ডিলারদের এসএমএস করে পরের দিনের দাম জানায় তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ দেশে পেট্রোল, ডিজেলের দাম প্রতিদিন ঘোষণার পরিকল্পনা আগেই ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি। পরীক্ষামূলক ভাবে পাঁচ শহরে তা চালুও করেছে তারা। বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি) জানাল, ১৬ জুন থেকে এ বার এই পদ্ধতি চালু হতে চলেছে সারা দেশেই।

Advertisement

তবে এ নিয়ে এত তাড়াহুড়োর বিরোধী ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন। আগে কমিশন হিসেবের পদ্ধতি ঠিক না- করলে নতুন জমানায় তার অঙ্ক কমতে পারে বলেও শঙ্কিত তারা। তাই আগে তাদের দাবি বিবেচনা করা না-হলে, রাজ্যে নতুন ব্যবস্থা চালু করতে বাধা দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি।

২০১০ ও ২০১৪ সালে পেট্রোল ও ডিজেলের দর বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরে এখন প্রতি মাসের ১ ও ১৬ তারিখ তেলের দরের বাড়া-কমা ঘোষণা করে সংস্থাগুলি। তার বদলে এ বার তা জানানো হবে রোজই। পরীক্ষা -মূলক ভাবে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে পুদুচেরি, বিশাখাপত্তনম, উদয়পুর, জামশেদপুর ও চণ্ডীগড়ে। সেখানে রোজ রাতে ডিলারদের এসএমএস করে পরের দিনের দাম জানায় তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। ওই পাইলট প্রকল্পে সুবিধা-অসুবিধা খতিয়ে দেখে সারা দেশে নতুন ব্যবস্থা চালু করছে তারা।

Advertisement

দেশে পেট্রোল-ডিজেলের দর ঠিক হয় বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম আর ডলার ও টাকার বিনিময়মূল্যের ভিত্তিতে। এই দু’য়ের উপর ভর করে যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে তা করা যায়, সেই লক্ষ্যেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১৫ দিন অন্তর তা ঘোষণার।

আরও পড়ুন:জিএসটি নিয়ে এখনই কড়া হবে না কেন্দ্র

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনীতির হস্তক্ষেপ থেকে যাচ্ছিল তার পরেও। শিয়রে গুরুত্বপূর্ণ ভোট থাকলে অনেক সময়ে দেখা যায় যে, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর বাড়া সত্ত্বেও পেট্রোল-ডিজেলের দাম এখানে বাড়ছে না। তাঁরা মনে করছেন, উন্নত দুনিয়ার ধাঁচে রোজ দাম ঘোষণার নতুন নিয়ম চালু হলে, সেই প্রভাব কমবে। উপরন্তু প্রতিদিন তেলের দাম ঘোষণা করলে, সাধারণত তা ওঠা-নামা করবে খুব কম। কয়েক পয়সা মাত্র। সে ক্ষেত্রে তা হয়তো সাধারণ মানুষেরও তেমন গায়ে লাগবে না।

আইওসি-র দাবি, এতে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দরের সঙ্গে তাল মেলানো সহজ হবে। পুরো বিষয়টিতে স্বচ্ছতা আসবে। তবে অনেক ক্রেতার প্রশ্ন, দামে বদল তাঁরা জানবেন কখন? কী ভাবে? পাম্পগুলি ঠিক দাম নিচ্ছে কি না, তার নজরদারিই বা সংস্থাগুলি করবে কী ভাবে? আইওসি-র আশ্বাস, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কথা হচ্ছে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া, অ্যাপ চালু ইত্যাদির।

ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তুষার সেনের অবশ্য প্রশ্ন, এ নিয়ে তাড়াহুড়োর যৌক্তিকতা কী? তাঁর দাবি, ‘‘পাইলট প্রকল্পে অনেক জায়গায় অসুবিধা হয়েছে শুনেছি।’’ তুষারবাবুর অভিযোগ, আগে তাঁদের কমিশনের হিসেব ঠিক না-করলে, নতুন ব্যবস্থায় ডিলারদের আয় কমবে। আগে তার সুরাহা না-হলে, নতুন পদ্ধতি এ রাজ্যে চালু করতে না-দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন