কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফও) থেকে এ বছর আরও বেশি অর্থ শেয়ার বাজারে লগ্নি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী বন্দারু দত্তাত্রেয়।
গত বছর ইপিএফের টাকার একটা অংশ প্রথম শেয়ার বাজারে ঢালার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। সেই অনুযায়ী, আগের বছর তহবিলে জমা পড়া নতুন টাকার ৫ শতাংশ বাজারে লগ্নি করা হয়। বলা হয় ধাপে ধাপে তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার কথা। সেই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার দত্তাত্রেয় জানান, ‘‘এ বছর আরও বেশি অর্থ লগ্নি হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব মহলের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। সকলের মতামত নেওয়া হচ্ছে।’’ সরকারি সূত্রের বক্তব্য, আগামী মাসে ইপিএফও-র কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
গত আর্থিক বছরে ইপিএফও-র টাকা বাজারে বিনিয়োগ করে ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল শ্রমিক সংগঠনগুলি। সেই কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছিল তারা। অছি পরিষদের বৈঠকে শ্রমিক নেতারা এর বিরোধিতা করবেন বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন শ্রমমন্ত্রীর দাবি, ক্ষতি নয়, কিছুটা হলেও মুনাফা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘গত বছরের অগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত ৬,৭৮৮ কোটি টাকা শেয়ার বাজারে ঢালা হয়েছে। সেই লগ্নি থেকে আয় হয়েছে ১.৬৮ শতাংশ হারে। আগামী বছর আরও বেশি অর্থ লগ্নি করা হবে।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘দীর্ঘ মেয়াদে এই লগ্নি লাভজনক। ইপিএফের ঘরে আসা বাড়তি টাকার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত লগ্নির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু শুরুর দিকে আমরা সাবধানে অর্থ লগ্নি করছি।’’
এ বছর কতখানি অর্থ বিনিয়োগ করা হবে, তা নিয়ে শ্রমমন্ত্রী মুখ খুলতে চাননি। তবে সরকারি সূত্রের বক্তব্য, এ বছর ইপিএফ থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করা হতে পারে শেয়ার বাজারে। যা তহবিল বৃদ্ধির প্রায় ৮.৫ শতাংশ বলে মনে করছেন শ্রম মন্ত্রকের কর্তারা।
গত অগস্টে বাজারে ইপিএফের অর্থ লগ্নি শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তা করা হচ্ছে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ই টিএফ) মাধ্যমে। যা অনেকটা মিউচুয়াল ফান্ডের মতো। এর ইউনিট শেয়ারের মতো লেনদেন হয় স্টক এক্সচেঞ্জে।
শ্রম মন্ত্রকের যুক্তি, ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছিল, শেয়ার বাজারে লগ্নিতে ক্ষতি হচ্ছে। ৬ অগস্ট থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধাপে ধাপে ৫,৯২০ কোটি টাকা লগ্নি করা হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ে শেয়ার বাজারে সেই লগ্নির মূল্য কমে দাঁড়ায় ৫,৩৫৫ কোটি টাকা। তাতে সমালোচনা শুরু হয়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ওই লগ্নি থেকে লাভ মিলছে। অবশ্য বাজারের রিটার্ন সুদের হারের থেকে অনেক নীচে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তা অনেকখানি বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের আশা। অছি পরিষদের বৈঠকে সেই যুক্তি দেখিয়েই বাজারে আরও বেশি লগ্নির পক্ষে সওয়াল করবেন শ্রমমন্ত্রী।