দেউলিয়া বিধি বদলে সায়

ঘুরপথে সংস্থা নিতে নিষেধ খেলাপিকে   

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
Share:

অরুণ জেটলি

গায়ে লেপ্টে স্বেচ্ছায় ঋণ খেলাপির তকমা। অথচ নিজের সংস্থার নিলামে হয়তো তারাই অংশ নিচ্ছে ঘুরপথে সস্তায় নিয়ন্ত্রণ হাতে ফেরাতে। অঙ্কুরে এই সম্ভাবনা বিনাশ করার লক্ষ্যেই দেউলিয়া বিধিতে বদল করছে কেন্দ্র। অনেকে বলছেন, এসার ও জেপি অ্যাসোসিয়েটসের সাম্প্রতিক ঘটনায় নতুন বিতর্কের দরজা খোলার আঁচ পেয়েই তড়িঘড়ি এ পথে হাঁটল তারা।

Advertisement

বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এ বিষয়ে অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি ভাবে রাষ্ট্রপতির সিলমোহর না-মেলা পর্যন্ত এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের খবর, নতুন বিধিতে দু’দিকের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে চাইছে কেন্দ্র। এক দিকে তারা চায় যাতে ইচ্ছাকৃত ভাবে ব্যাঙ্কের ধার না-মেটানো মালিকের হাতে সংস্থার রাশ না-ফেরে। তেমনই আবার মালিকদের উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারির পক্ষপাতী নয় কেন্দ্র। বিশেষত যাঁরা আগে বাস্তবসম্মত কারণে দেনা শোধ করতে পারেননি কিংবা যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন ঋণ মেটাতে, তাঁদের জন্য রাস্তা বন্ধ করতে চায় না কেন্দ্র।

গত বছর দেউলিয়া বিধি চালুর পরে ব্যাঙ্কের দেনা শোধ করতে না-পারা ১২টি সংস্থাকে দেউলিয়া ঘোষণা করে তাদের সম্পত্তি নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মামলাগুলি গিয়েছে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনালে। দেখা গিয়েছে শুধু তাদের শোধ না-করা দেনাই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের ২৫%।

Advertisement

কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে নিজেদের সংস্থার সম্পত্তি কিনতে নিলামে আগ্রহ দেখায় এসার স্টিলের মালিক রুইয়া গোষ্ঠী এবং জেপি-র মালিকরা। এখন এতে আইনি বাধা নেই। কিন্তু অনেকেই বলেছিলেন, এতে কম টাকায় (যেহেতু দেউলিয়া সংস্থা হিসেবে তা কমে বিক্রির সম্ভাবনা) নিজেদের সম্পদ ফিরে পাবে তারা। বইতে হবে না ধারের বোঝাও।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সে ক্ষেত্রে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ওই সব সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলত বিরোধীরা। তাই ঝুঁকি না-নিয়ে তাড়াতাড়ি এই অর্ডিন্যান্স জারির পথে হাঁটা।

শিল্পমহলের একাংশের অবশ্য যুক্তি, অনেক সংস্থা সত্যিই সমস্যার কারণে দেউলিয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ না-দেওয়া অন্যায়। এমনও হতে পারে, তারা ছাড়া আর কেউ আগ্রহী নয়। কিংবা তারা বেশি দর দিতে রাজি। তখন তা গ্রহণ না করা অযৌক্তিক।

সামনেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। তবুও অর্ডিন্যান্স কেন? মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, ডিসেম্বরের মধ্যে ওই ১২টি সংস্থার নিলামে দর হাঁকা শেষ হবে। তার আগে সঠিক প্রক্রিয়া তৈরি করতেই এই অর্ডিন্যান্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন