কেন্দ্রের নজরে। সুব্রত রায়। ছবি: রয়টার্স।
রোজগার অল্প। তাই ব্যাঙ্কের বদলে চড়া সুদের টানে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার কাছে টাকা রেখেছেন এবং সর্বস্ব খুইয়ে অথৈ জলে পড়েছেন। সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে চলা এ রকম অসংখ্য ঘটনা আটকাতে এ বার আরও কড়া হাতে এই সব লগ্নি প্রকল্পের রাশ ধরতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যে-কারণে দেশের সমবায় ঋণ সংস্থাগুলিকে কঠোর নিয়ম-নীতির আওতায় বাঁধতে আগামী জুলাইয়েই বিল পাশের পরিকল্পনা করেছে তারা।
এই সমবায় ঋণ সংস্থাগুলি কার্যত তৈরিই হয়েছে অল্প আয়ের এবং গরিব মানুষের সঞ্চয়ের সুযোগ করে দিতে। সরকারি মহলের দাবি, এই সুযোগ নিয়ে তারা চড়া সুদের লোভ দেখিয়ে বেআইনি ভাবে বাজার থেকে টাকা তোলে। নতুন লগ্নিকারীদের কাছ থেকে তোলা টাকা পুরনোদের ফেরাতে খরচ করে ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাদের কৌশল। সে ভাবেই সমবায় সংস্থার তকমা নিয়ে এগিয়েছে সহারা-ও। যে-মুহূর্তে এ সব সংস্থা আর নতুন লগ্নি পায় না, তখনই বন্ধ হয় বাদবাকিদের টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া। প্রতারিত হন অসংখ্য মানুষ।
বেআইনি ভাবে বাজার থেকে তোলা টাকা লগ্নিকারীদের না-ফেরানোর অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম সহারা। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না-মানায় ২০১৪ সালে সহারা-কর্তা সুব্রত রায়ের জেল হয়। এখন অবশ্য তিনি প্যারোলে মুক্ত। আর্থিক বিষয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নিশিকান্ত দুবে এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতে সহারার মতো আর্থিক কেলেঙ্কারি যাতে না-ঘটে সেই লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ করা।’’
কেন্দ্রীয় সূত্রে দাবি, এখন যে-আইনে সমবায় ঋণ সংস্থাগুলি চলে তা দুর্বল। নজরদারির কর্মী কম। এমনকী যাঁরা এই প্রতারণার মূল মাথা, খুব কম ক্ষেত্রেই তাঁরা শাস্তি পান। নতুন বিলে এই সব খামতি পূরণের ব্যবস্থাই রাখা হবে বলে আশা। তা ছাড়া, বেআইনি লগ্নি প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি আর্থিক প্রতারণার ফাঁদ থেকে শহর-গ্রামের ছোট, গরিব লগ্নিকারীদের সরিয়ে আনাই হবে নতুন বিলের লক্ষ্য। যাতে সকলকেই ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার বৃত্তে আনা যায়।