Cairn India

কেয়ার্ন রায়ের বিরুদ্ধে মার্চেই আবেদন জানিয়েছে সরকার

সংস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে ভারতের সম্পত্তি কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে বেচায় ব্রিটিশ সংস্থা কেয়ার্ন এনার্জিকে

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২১ ০৬:১০
Share:

ফাইল চিত্র।

কেয়ার্ন এনার্জির বকেয়া কর নিয়ে মামলায় হেগের আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে হেরেছিল ভারত। আদালতের নির্দেশ ছিল, সংস্থাটিকে ১২০ কোটি ডলার (সুদ ও খরচ মিলিয়ে ১৭২.৫ কোটি ডলার বা প্রায় ১২,৬০০ কোটি টাকা) ফেরাতে হবে ভারতকে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২২ মার্চই আবেদন জানানো হয়েছে বলে রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। পাশাপাশি কেন্দ্রের দাবি, এই মামলায় সালিশ নিয়োগ করলেও, ভারতের ‘নিজস্ব কর সংক্রান্ত বিবাদে’ সালিশির জন্য তারা কখনওই রাজি ছিল না। সেই সঙ্গে ২০০৬ সালে নিজেদের সংস্থা ঢেলে সাজানোর নামে কেয়ার্ন কর ফাঁকির চেষ্টা করেছিল বলেও তোপ দেখেছে মন্ত্রক। তাদের দাবি, এই কারণেই এই মামলা ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় আসে না।

Advertisement

অন্যান্য দেশের ব্যাঙ্কে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বিদেশি মুদ্রা অ্যাকাউন্ট থেকে কেন্দ্র টাকা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বলে যে খবর ছড়িয়েছে, তা-ও সত্যি নয় বলে আজ দাবি করেছে অর্থ মন্ত্রক। কেয়ার্ন যাতে বকেয়া উদ্ধারের জন্য সেই অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত না-করতে পারে, সেই জন্যই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল সূত্র। কিন্তু এই খবর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ছড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছে সরকার।

উল্লেখ্য, সংস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে ভারতের সম্পত্তি কেয়ার্ন ইন্ডিয়াকে বেচায় ব্রিটিশ সংস্থা কেয়ার্ন এনার্জিকে বকেয়া ১০,২৪৭ কোটি টাকা কর দিতে বলেছিল আয়কর দফতর। পরে তা আদায়ে বেদান্তে (যারা পরে কেয়ার্ন ইন্ডিয়া কিনেছে) কেয়ার্ন এনার্জির শেয়ার বেচে দেয় দফতর, ডিভিডেন্ড বাজেয়াপ্ত করে, আটকায় ফেরতযোগ্য করও। এর বিরুদ্ধেই আন্তর্জাতিক স্থায়ী সালিশি আদালতে যায় কেয়ার্ন। ট্রাইবুনাল ভারতের বিরুদ্ধে রায় দেয়।

Advertisement

সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও বলেছিলেন, দেশের মধ্যে লেনদেনের উপরে সরকারের কর বসানোর অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ওই রায়। ফলে তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানো তাঁদের কর্তব্য। তা ছাড়া অর্থ মন্ত্রক মনে করে, ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক লগ্নি চুক্তির অঙ্গ নয় কর। অথচ আদালত সেই চুক্তি ভাঙারই অভিযোগ তুলেছে। এই কারণেও তার বিরুদ্ধে আবেদন করা উচিত। তবে সেই আবেদন কতটা সফল হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ, একমাত্র রায় বা শুনানির পদ্ধতিতে কোনও খামতি থাকলেই সাধারণত সেই আর্জি জানানো যায়।

অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, এই রায় আদতে বিশ্বের সব দেশেই কর ফাঁকির প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়েছে। যা যে কোনও দেশের কাছেই উদ্বেগের। তবে সেই সঙ্গে কেন্দ্রের দাবি, ইতিমধ্যেই কেয়ার্নের উচ্চপদস্থ কর্তারা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আগামী দিনেও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র খোঁজার বিষয়ে আশাবাদী সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন