কিছু ক্ষেত্রে বাড়বেও, মনে করছে শিল্পমহল

দামে স্বস্তির দাবি কেন্দ্রের

আমজনতার মধ্যে জিএসটির জেরে দাম বাড়ার আশঙ্কা উস্‌কে দিয়েছে এখন বিভিন্ন পণ্যে ঢালাও ছাড়। তা সে শপিং মলে হোক বা ই-কমার্স সংস্থার ওয়েবসাইটে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৩:২২
Share:

অরুণ জেটলি

পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) বোঝা কতটা ‘সহজ’, তা নিয়ে জোর রসিকতা সোশ্যাল মিডিয়ায়। উপচে পড়ছে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, এর হিসেব কষা শক্ত। সাধারণ মানুষ অবশ্য অত শত বোঝেন না। তাঁরা মূলত জানতে চান, এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস-পত্তরের দাম আগুন হবে কি না। অনেকেরই তেমন আশঙ্কা রয়েছে। আর তা জানা বলেই গোড়া থেকে দাম না-বাড়ার আশ্বাস দিচ্ছে কেন্দ্র। কোন-কোন পণ্য-পরিষেবার দাম কমবে, নাম ধরে-ধরে তার উল্লেখ করেছে অর্থ মন্ত্রক (বিস্তারিত সঙ্গের সারণিতে)। ব্যাখ্যা করেছে কারণও। শিল্পমহলের অবশ্য দাবি, তা মুদ্রার এক পিঠ। জিএসটির দৌলতে আসলে দাম বাড়বেও বহু পণ্য-পরিষেবার। সব মিলিয়ে, আসল ছবি সামনে আসবে জিএসটি চালুর পরেই।

Advertisement

আমজনতার মধ্যে জিএসটির জেরে দাম বাড়ার আশঙ্কা উস্‌কে দিয়েছে এখন বিভিন্ন পণ্যে ঢালাও ছাড়। তা সে শপিং মলে হোক বা ই-কমার্স সংস্থার ওয়েবসাইটে। বহু জায়গায় হাতছানি দিচ্ছে বিজ্ঞাপন, জিএসটি চালু হলে দাম বাড়বে। তাই তার আগেই সস্তায় কেনার এই হিড়িকে বিকোচ্ছে গাড়ি থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিন পণ্য। এমনকী পরে জামা-কাপড়ের দাম বাড়তে পারে বলে, পুজোর বাজার এখনই সেরে রাখা উচিত কি না, তেমন ভাবনা-চিন্তাও করছেন অনেকে।

অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের অবশ্য আশ্বাস, জিএসটি-তে প্রতিটি পণ্য ও পরিষেবা আলাদা ভাবে ধরে করের হার ঠিক হয়েছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সমস্ত পণ্যে এখন যে-কর বসে, তার সব চেয়ে কাছের হারটিই ধার্য হয়েছে। তাঁদের দাবি, তা করতে গিয়ে কোথাও হয়তো করের বোঝা কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু কমেছে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই। এই দাবি বারবার করেছেন খোদ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও।

Advertisement

জিএসটি-কথা

জিএসটি চালু হলে দাম কমবে অনেক পণ্য-পরিষেবার। এমনই দাবি মোদী সরকারের। নতুন করের আওতায় আসা পণ্য-পরিষেবার তালিকা অনেক লম্বা। তার মধ্যে অন্তত নীচেরগুলির দাম কমবেই বলে ইতিমধ্যে দাবি করেছে অরুণ জেটলির অর্থ মন্ত্রক। জানিয়েছে কারণও। যেমন—

একই সঙ্গে রাজস্ব দফতরের কর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু করের উপরেই যে দাম ঠিক হবে, এমন নয়। জিএসটি-র সব থেকে বড় সুবিধা হল, তা চালু হলে আগের স্তর পর্যন্ত মেটানো কর ফেরত মিলবে (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট)। অর্থাৎ, কাপড়-বোতাম-সুতো দিয়ে জামা তৈরি হলে, জামার উপরে কর মেটানোর সময়ে কাপড়-বোতাম-সুতোর উপরে আগেই মেটানো করের টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। ফলে শুধু কোন পণ্যে কত কর বসছে দেখলে চলবে না। দেখতে হবে, কাঁচামালে মেটানো কর ফেরত পাওয়ার পরে নিট কত গুনতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, এই হিসেব কষলে দেখা যাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করের বোঝা আসলে কমেছে।

প্রশ্ন হল, ভ্যাটের ক্ষেত্রেও তো এই সুবিধা ছিল। রাজস্ব দফতরের কর্তাদের যুক্তি, ভ্যাটে তা মিলত শুধু পণ্যে। এখন পরিষেবা ক্ষেত্রেও তা পাওয়া যাবে। যেমন, কেউ হয়তো উপদেষ্টা সংস্থা চালান। তাঁকে পরিষেবার জন্য কর গুনতে হবে। কিন্তু তেমনই সেই সংস্থার দফতরের জন্য কেনা বাতানুকূল যন্ত্রে ‘ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট’ পাবেন তিনি।

কিন্তু কর কমলেই যে দাম নামবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, জিএসটি-র আইনেই করের বোঝা কমার সুবিধা ক্রেতাকে দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। তা না-মানলে আছে শাস্তির বিধানও। শিল্পমহল অবশ্য বলছে, হিসেব অত সরল নয়। আসলে করের বোঝা বাড়ছে বেশ কিছু পণ্য-পরিষেবায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন